তৃণমূলে ছিলেন, তৃণমূলেই আছেন, জানিয়ে দিলেন। পাশাপাশি বললেন "ভুল হয়ে গিয়েছে।" তিনি তৃণমূল নেতা তথা বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র সব্যসাচী দত্ত, যাঁকে ঘিরে গত ক’দিনে তৃণমূলে জোর অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। কারণ, সব্যসাচীর বাড়িতে গিয়েছিলেন একদা মমতা সেনাপতি তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। মুকুল-সব্যসাচীর আলাপচারিতা নিয়ে ভোটের মুখে বেজায় চটেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে দল শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনতে পারে বলেও জল্পনা ছড়ায় বঙ্গ রাজনীতিতে। তড়িঘড়ি রবিবার বিধাননগর পুরনিগমের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসার নির্দেশ দেন খোদ মমতা। ফিরহাদ হাকিম ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নেতৃত্বাধীন সেই বৈঠকেই সব্যসাচী স্বীকার করলেন, "ভুল হয়ে গিয়েছে।"
আরও পড়ুন, তৃণমূলের ঘরে বড় ভাঙন, মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপি-তে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ
এ প্রসঙ্গে রবিবার বৈঠক শেষে সব্যসাচী জানান, "সেদিন রাতে আমি বাড়ি ফিরছিলাম। একটা নম্বর থেকে ফোন আসে। হ্যালো বলতেই অপর দিক থেকে বলা হয়, দাদা বলছি। আমি বললাম হ্যাঁ, বলুন। তখন বললেন, আমি মুকুলদা বলছি। বললাম, বলো। বললেন, অনেকদিন তোদের সঙ্গে দেখা হয় না। সল্টলেকের দিকে এসেছি। আমি তোর বাড়িতে আসছি। বাড়িতে কেউ আসতে চাইছেন, তাঁকে কি না বলব? বললাম এসো। বাড়িতে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়। উনি বললেন, লুচি-আলুর দম খাবেন। লুচি-আলুর দম তো কারও বাড়িতে তৈরি থাকে না। বানাতে সময় লাগে। যতটা সময় লেগেছিল, সেসময় কথা হয়েছে। তখন খেলা চলছিল। সেই নিয়ে কথা হয়েছে। রাজনীতি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তারপর উনি লুচি-আলুর দম খেয়ে চলে যান।"
সব্যসাচী আরও বলেন, "আমি জানতাম না উনি সংবাদমাধ্যমকে ডেকেছেন। এও জানতাম না যে আমার বাড়ির সামনে সংবাদিকরা অপেক্ষা করে ছিলেন। উনি একটা জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছিলেন।" বিধাননগরের মেয়র বলেন, "আমি তৃণমূলর বিশ্বস্ত সৈনিক। তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব। উনি খামখা পরিস্থিতি জটিল করছেন।"
বৈঠক শেষে রবিবার পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "সব্যসাচী স্বীকার করেছেন, ভুল হয়ে গিয়েছে ওঁর। উনি দলের সঙ্গেই রয়েছেন। আর কোনও সমস্যা নেই।" পাশাপাশি মুকুল রায়কে বিঁধে ফিরহাদ বলেন, "ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে ভোটের আগে দরজায় দরজায় ঘুরছেন বিজেপির এক শীর্ষ নেতা। বলছেন, আমাদের প্রার্থী হবে গো? ভিখিরিপনা করছেন। আমরা বিজেপিকে হারাবই।"
Read the full story in English