মুকুলই সব জানেন, আমি কিচ্ছু জানি না, চিটফান্ড তদন্তে সিবিআই-এর তলব পেয়ে কার্যত এই ভাষাতেই সব দায়ে 'ঝেড়ে ফেলেছেন' তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন সাংসদ সুব্রত বক্সি। সূত্রের খবর, পার্থ-সুব্রতদের সাফ দাবি, ২০১৩ সালে যখন সারদা চিটফান্ডকাণ্ড সামনে আসে তখন তৃণমূলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ই দলের তহবিল এবং লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করতেন।
আরও পড়ুন- জয়প্রকাশকে লাথি, নির্বাচন কমিশনকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করাল কংগ্রেস-সিপিএম
সিবিআই সূত্রে খবর, সারদা চিটফান্ডকাণ্ড এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিক্রির মধ্যে কিছু যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১০-১১ সালে তত্ৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতার ছবির প্রদর্শনী করেছিল তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'। সেই প্রদর্শনী থেকে অত্যন্ত চড়া মূল্যে বেশ কিছু ছবি কিনেছিলেন চিটফান্ড সংস্থার কয়েকজন মালিক। সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের কেনা এমন কিছু ছবির বিষয়েই তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
আরও পড়ুন- দরকার হলে মমতা-সিপিএম-এর সমর্থন নিয়ে আমরা বাংলায় সরকার গড়ব: এআইএমআইএম
জানা যাচ্ছে, সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাকি দাবি করেছেন যে মুকুলই সে সময় দলের তহবিল রক্ষণাবেক্ষণ করতেন এবং লেনদেনের বিষয়ে তিনিই সব জানতেন। এদিকে, বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায় এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বরং মুকুলের দাবি, তিনি ২০০৫ সালে 'জাগো বাংলা' ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, "তৃণমূল এখন আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে"।
আরও পড়ুন- রাজীব কুমারের সাময়িক স্বস্তি, জামিন বাতিল মামলা মুলতবি সুপ্রিম কোর্টে
সূত্রের খবর, তৃণমূলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও দলীয় তহবিল সামলানোর ক্ষেত্রে সে সময় মুকুলের ভূমিকার কথা মেনে নিয়েছেন। দলের হয়ে অনুদান নেওয়া বা প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিক্রি প্রক্রিয়া পরিচালনা করার বিষয়টিও যে মুকুলই সামলাতেন, সে কথাও বলেছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, সুব্রত বক্সি মুকুলের ভূমিকার কথা বলার পরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও অনুরূপ দাবি করেছেন। পার্থ আরও জানিয়েছেন, তৃণমূলের আরও দুই প্রাক্তন সাংসদ (রাজ্যসভার) সে সময় 'জাগো বাংলা'র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন- মমতার কপালে চিন্তার ভাঁজ, বাংলায় আসছে নতুন রাজনৈতিক দল
এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়ে কোনও রকম মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে খবর, সিবিআই-কে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে ২০১৩ সালে তিনি 'জাগো বাংলা'র সম্পাদক ছিলেন না এবং দলের সাংগঠনিক প্রধানও ছিলেন না। সিবিআই সূত্র বলছে, সে সময় দলীয় তহবিল এবং লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে ঠিক কী হয়েছিল, সে বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই বলে জানিয়েছেন পার্থ। উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্র বক্সিকে যেমন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই, তেমনই চিটফান্ড মামলায় ইতিমধ্যে মুকুল রায়কেও একাধিক বার তলব করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
Read the full story in English