গ্রেফতার করা হয়েছিল আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, কবি ভারভারা রাও, অরুণ ফেরেইরা, গৌতম নওলাখা, ভার্নন গনজালভেজকে। পুলিশের বক্তব্য, এ বছরের গোড়ায় পুনে ও সংলগ্ন এলকায় ভীমা কোরেগাঁও আন্দোলনের ২০০ বছর পূর্তিতে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে তার পিছনে এঁদের হাত ছিল। পুলিশ মঙ্গলবার হানা দেয়, দিল্লি, ফরিদাবাবাদ, হায়দরাবাদ, রাঁচি মুম্বই ও গোয়াতে।
আরও পড়ুন, এলগার পরিষদ কাণ্ডে গ্রেফতার পাদ্রি, আইনজীবী, অধ্যাপক, কবি
এর আগে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে সোমা সেন, রোনা উইলসন, সুধার ধাওয়ালেস অন্তাচি চালওয়াল, সুরেন্দ্র গ্যাডলিং ও মেহশ রাউতকে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, এলগার পরিষদের অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য মাওবাদীদের অর্থের জোগান দিয়েছেন এঁরা। এ ছাড়াও তাঁদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজীব গান্ধীর কায়দায়’ হত্যা করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

এদিন এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে আয়োজিত এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অ্যাক্টিভিস্ট ভার্নন গনজালভেজের স্ত্রী বলেন, ‘‘ভীমা কোরেগাঁও ঘটনার সঙ্গে আমাদের কী সম্পর্ক রয়েছে? আজ পুনে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে, শহুরে নকশালপন্থায় ইন্ধন দেওয়ার জন্য যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের পেন ড্রাইভ ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবেই শহুরে নকশালপন্থাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।’’
এদিকে পুনে পুলিশ তাদের কেন্দ্রকে দেওয়া রিপোর্টে জানিয়েছে, নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই মাওবাদী-র হিংসাত্মক কার্যকলাপে মদত দেওয়ার অভিযোগ এঁরা এড়িয়ে যেতে পারেন না।
আরও পড়ুন, #MeTooUrbanNaxal কারা, তালিকা বানাতে চেয়ে বিপাকে বিবেক অগ্নিহোত্রী
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে ইউপিএ সরকার ১২৮টি সংগঠনকে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ব্যাপারে চিহ্নিত করে। সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও বলা হয়। এঁদের মধ্যে সাতদন, ভারভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, রোনা উইলসন, অরুণ ফেরেইরা, ভার্নন গনজালভেজ ও মহেশ রাউত তালিকাভুক্ত ওই সংহঠনগুলির সঙ্গে যুক্ত বলে গ্রেফতার করা হয়।’’

রিপোর্টে আরও বলা হয়, ‘‘সিপিআই মাওবাদী, যাদের আসল লক্ষ্য হল জনযুদ্ধের মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করা, তারা শহরাঞ্চলের আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সিপিআই মাওবাদী নেতৃত্ব ও সম্পদ জোগান যায় শহরাঞ্চলের আন্দোলন থেকে। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে সমস্ত ধরনের তথ্যের জোগানও যায় এই শহর কেন্দ্রগুলি থেকেই।’’
এদিন সুপ্রিম কোর্টে রোমিলা থাপার, প্রভাত পট্টনায়েক, সতীশ দেশপাণ্ডে এবং অন্যরা সুধা ভরদ্বাজ এবং গৌতম নওলাখার গ্রেফতারির বিরুদ্ধে যে আবেদন করেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ’’গণতন্ত্রের সেফটি ভালভ হল মতানৈক্য। মতানৈক্যকে যদি প্রশ্রয় না দেওয়া হয়, তাহলে প্রেশার কুকার বার্স্ট করতে পারে।’’