একে একে ছেড়ে চলে যাচ্ছে নিজেরই দলের নেতা-মন্ত্রী। অভিমানে, আবেগে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। একজনও বিধায়ক এসে যদি বলেন, তাঁকে পছন্দ নয়, সেই মুহূর্তেই গদি ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধব। এও বলেছেন, নিজের লোক আঘাত করলে বেশি কষ্ট হয়। এই আবেগী ভাষণের পর পরই মালাবার হিলসে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন বর্ষা ছাড়েন বালাসাহেব-পুত্র। সপরিবারে চলে আসেন পৈতৃক বাড়ি মাতশ্রীতে।
এবার বিদ্রোহী একনাথ শিণ্ডে আরও বড় বোমা ফাটিয়েছেন। বৃহস্পতিবার নাটকের শুরুতেই বিরাট একটি চিঠি টুইট করেছেন। সেখানে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ তুলে ধরেছেন দলের সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে। সেই চিঠিতে বিদ্রোহী বিধায়কদের কথা তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিটি লিখেছেন ঔরঙ্গাবাদের বিধায়ক সঞ্জয় শিরসাত।
এই চিঠিতে উদ্ধবের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তাঁকে পাওয়া যায় না দরকারে। দলের বিধায়কদের ধরাছোঁয়ার বাইরে তিনি। এমনকী মধ্যবর্তী কিছু লোকজন সেনা বিধায়ক এবং উদ্ধবের মাঝে পাঁচিল তুলেছেন। তাই বিধায়করা শিণ্ডের শরণাপন্ন হয়েছেন এর বিহিত করতে।
আরও পড়ুন কিস্তিমাতের দাবি শিন্ডের, সঙ্গে ৪০ বিধায়ক, কে প্রকৃত শিবসেনা তাই নিয়ে টানাপোড়েন
মারাঠিতে লেখা চিঠির ছত্রে ছত্রে উদ্ধবকে তুলোধনা করা হয়েছে। ২২ জুন লেখা সেই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন বর্ষার গেট নাকি শিবসেনা বিধায়কদের জন্য কখনও খোলেনি। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর আশেপাশে কিছু নেতা ঘোরাঘুরি করেন। শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও দলীয় বিধায়করা কখনও বর্ষা বাংলোয় ঢুকতে পারতেন না।
চিঠিতে উল্লেখ, "গতকাল বর্ষার গেট সাধারণের জন্য খোলা হয়েছে। বাংলোর সামনে এত ভিড় দেখে ভাল লাগছে। কিন্তু ওই বাংলোর দরজা শিবসেনা বিধায়কদের জন্য গত আড়াই বছর খোলেনি। বিধায়ক হিসাবে সেই গেট দিয়ে ঢুকতে হলে আমাদের কাকুতি-মিনতি করতে হত। তাও তাঁদের কাছে যাঁরা কখনও ভোটে দাঁড়াননি, কিন্তু বিধান পরিষদে বা রাজ্যসভায় আমাদের ভোটে জিতেছেন। তাঁরা নাকি চাণক্য, এবং বিধান পরিষদ ও রাজ্যসভা নির্বাচনের রণনীতি তাঁরা তৈরি করেন।"
আরও পড়ুন ‘বিদ্রোহের আঁচ পেলেন না কেন?’, বাড়ি ডেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তুলোধনা পওয়ারের
"মুখ্যমন্ত্রী ছয় তলায় সবার সঙ্গে দেখা করতেন। কিন্তু আমাদের জন্য ছয় তলায় ওঠার কোনও অনুমতি ছিল না। কারণ আমরা মন্ত্রিসভার সদস্য নই।" চিঠিতে অভিযোগ, "অনেক আর্জির পর উদ্ধবের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি মেলে। কিন্তু আমাদের গেটের সামনে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হত। আমরা ফোন করলে এই চাণক্যরা ফোন ধরতেন না। তখন আমরা ক্লান্ত হয়ে চলে যেতাম। দলের বিধায়ক হয়ে ৩-৪ লক্ষ ভোটে জিতে যদি এত অপমান হয় তাহলে আর কিছু বলার নেই।"