এলাকায় কোনও সিনেমা হল নেই। তাই শেষমেশ সিনেমা দেখানোর জন্য ‘মোবাইল ডিজিটাল থিয়েটার’-এর ব্যবস্থা করা হল। যে ছবির জন্য এই আয়োজন, সেই ছবি মোদী সরকারের ‘কাছের ছবি’ বলেই আলোচিত সংশ্লিষ্ট মহলে। ছবির নাম ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’। ঘটনাস্থল রাহুল গান্ধীর লোকসভা কেন্দ্র আমেঠি। সেখানে সিনেমা হল না থাকায়, এ ছবি প্রদর্শনের জন্য বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। শুধু তাই নয়, নিখরচায় আমেঠিবাসী এ সিনেমা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখেই বিজেপি নেতৃত্বের এই চাল বলে মনে করছে কংগ্রেস।
প্রজাতন্ত্র দিবস থেকেই এই ছবি সেখানে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এলাকার একটা মশলার কারখানায় দিনে ৪টি শো-তে দেখানো হচ্ছে ‘উরি’। গত ২৬ জানুয়ারি মন্ত্রীর একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছবির প্রদর্শনী শুরু করা হয়। এমনকি, ছবির অফিসিয়াল পোস্টারে স্মৃতির ছবিও রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বিধানসভা নির্বাচনে আমেঠি থেকে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন স্মৃতি ইরানি।
আরও পড়ুন, বিজেপির দুর্ভাগ্য, ওদের দলে সুন্দর মুখ নেই, আক্ষেপ কংগ্রেস নেতার
২০১৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়েই এ ছবি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে বরাবরই ‘গর্ববোধ’ করে মোদী বাহিনী। যদিও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে মোদী সরকারের প্রচার ‘অহেতুক’ বলেও সরব হয়েছেন অনেকে। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে বিষয়বস্তু করে এমন বলিউডি ছবিকে হাতছাড়া করতে চায় না বিজেপি। তাই রাহুলের কেন্দ্রে এ ছবির প্রদর্শনীর জন্য এমন আয়োজন বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি যুব নেতৃত্বের সাধারণ সম্পাদক বিষুব মিশ্র বলেছেন, ‘‘আমেঠিতে কোনও সিনেমা হল নেই। এলাকায় সিনেমা হলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বাসিন্দারা। তাই স্মৃতি ইরানি ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করলেন।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘মোবাইল ডিজিটাল থিয়েটার’-এ ১৫০ জন দর্শক একসঙ্গে ছবি দেখতে পারবেন। শো টাইম হিসেবে সকাল ৯টা ২০, দুপুর ১টা ৩০, বিকেল ৫টা, ও রাত ৮টার স্লট বাছা হয়েছে। দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, প্রায় ২ হাজার জন এ ছবি দেখে ফেলেছেন। দিনে ৬০০ জন এ ছবি দেখতে আসছেন বলে দাবি তাঁদের।
বিষুব মিশ্র বলেছেন, ‘‘তরুণ সমাজের জন্যই আমাদের এই বার্তা। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময় দেশের সেনারা যেভাবে আত্মত্যাগ করেছেন, সেই কাহিনিই তুলে ধরতে চেয়েছি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে কংগ্রেস। আমরা নিশ্চিত যে, আমেঠির যুবকরা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বা ওঁর পরিবারের কাউকে হারিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করবেন।’’
এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস এমএলসি দীপক সিং বলেছেন, ভোট পাওয়ার জন্যই এ ছবি দেখানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা প্রথমবার নয় যে, সীমান্তে সেনারা নিজেদের সাহসিকতা দেখিয়েছেন। কিন্তু এটা প্রথমবার হচ্ছে যে, ভোট পাওয়ার নামে সেনাদের সাহসিকতাকে নিজেদের কৃতিত্ব হিসেবে তুলে ধরছেন কেউ। আমেঠির মানুষ সত্যিটা জানেন। সিনেমা দেখিয়ে ওঁদের ভুল পথে চালনা করা যাবে না।’’
Read the full story in English