Advertisment

'বঙ্গজননী'র হাত ধরেই ফের তৃণমূলে সোমেন-জায়া শিখা মিত্র

মমতার ফোনেই গললো বরফ। তৃণমূল সুপ্রিমোকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সোমেন-পুত্র রোহন মিত্র।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
somen mitras wife shikha mitra will join tmc in next week

অতীত ভুলে ফের তৃণমূলেই শিখা মিত্র।

'বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতাই মুখ।' এই মন্তব্যের পর জল্পনা ছিলই। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনেই বরফ গললো। প্রয়াত সোমেন মিত্রর স্ত্রী শিখা ফের জোড়া-ফুলে ফিরতে চলেছেন। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন দলের প্রাক্তন এই বিধায়ক। ঘাস-ফুলের শাখা সংগঠন 'বঙ্গজননী'র হাত ধরেই বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যের দলে যোগ দিতে চলেছেন শিখা মিত্র।

Advertisment

সোমেন-জায়ার তৃণমূলে ফেরা প্রসঙ্গে শিখা মিত্রর ছেলে রোহন মিত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছেন, "গত মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী মা-কে ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন যে মন খারাপ কাটাতে তাঁকে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে হবে। বঙ্গজননীর দায়িত্বে রয়েছেন মালা রায়। দিদি বলেছিলেন যে ওনাকেই মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলবেন।" এরপরই শুক্রবার তৃণমূল সাসংদ মালা রায় শিখাদেবীর বাড়িতে যান।

স্থির হয়েছে আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার শিখা দেবী তৃণমূলের শাখা সংগঠন 'বঙ্গজননী'তে যোগ দেবেন। অর্থাৎ ফের তৃণমূলেই ফিরছেন প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর স্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক শিখা মিত্র।

আরও পড়ুন- ‘খুঁজে খুঁজে বের করা হবে খুনিদের-পুলিশকেও রেয়াত নয়’, হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

এই পদক্ষেপের জন্য তৃণমূল সুপ্রিমোকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সোমেন-পুত্র রোহন মিত্র। তাঁর কথায়, "মা তৃণমূলের হয়েই বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আর কোনও দলে যাননি। রাজনীতিই ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহারে মায়ের ভালো লেগেছে। আপাতত উনি অনেকটাই উজ্জীবিত।" রোহ মিত্রর দাবি, একুশের ভোটে বিজেপির টিকিট প্রত্যাখ্যানের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও শিখা মিত্রকে ফোন করেছিলেন।

শিখা মিত্র তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। রোহনও কী তবে জোড়া-ফুলের পথেই? বিষয়টি ভবিষ্যতের উপর ছেড়ে দিলেও তাঁরও যে দল বদলের সম্ভাবনা রয়েছে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। রোহন বলেছেন, "বাবার প্রয়োজনেই রাজনীতিতে এসেছিলাম। অনের বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। অধীর চৌধুরী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি পালন করেননি। আমি রাজনীতি আপাতত ছেড়েছি। মাকে নেত্রী সম্মান দিয়েছেন। ডেকেছেন। উনি আপাতত রাজনীতিটা করন। আমার কথা ভবিষ্যত বলবে।"

আরও পড়ুন- ‘আফগানিস্তানে চলে যাও’, সাংবাদিকের প্রশ্নে চটে লাল বিজেপি নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

উল্লেখ্য, চিটফান্ড সহ নানা কারণে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তৎকালীন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ সোমেন মিত্রর। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে দল ছাড়ান তিনি। পরে যোগ দেন কংগ্রেসে। শোনা যায়, সোমেন মিত্রর এই পদক্ষেপের নেপথ্যে তাঁর বিধায়ক স্ত্রী শিখা মিত্রর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। শিখাদেবী নিজেও মেয়াদ শেষের আগেই বউবাজার বিধানসভার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। ২০১৬ সালে সোমেন মিত্র সভাপতি থাকাকালীনই কংগ্রেস-বাম আসন রফা হয়। যদিও ভোটে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি এই জোট। ২০১৯-এর লোকসভাতেও কংগ্রেসের শক্তিক্ষয় হয়। প্রবলভাবে মাথাচাড়া দেয় বিজেপি। এরপর ২০২০ সালে বাংলার প্রয়াত হন বাংলার অন্যতম পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ সোমেন মিত্র। একুশের ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারী শিখা ও রোহন মিত্রর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বিজেপিতে যোগদানের আবহ্বান জানান। এমনকী প্রার্থী তালিকাতেও নাম ছিল শিখাদেবীর। কিন্তু চা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। ভোটেই আগেই তিনি বলেছিলেন যে, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যোগ্য বিজেপি বিরোধী মুখ।'

তখন থেকেই ইঙ্গিত ছিল। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের মাধ্যমে মেঘ কাটলো। সাত বছর পর শিখা মিত্র ফের পুরনো দলেই ফিরছেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee
Advertisment