নির্বাচন কমিশনের থেকে রিপোর্ট চেয়েছেন রাজ্যপাল। কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। এবার সেই ছুতোয় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিধায়কপদ খারিজ করতে পারেন রাজ্যপাল। ছলে-বলে ফেলে দেওয়া হতে পারে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও কংগ্রেসের জোট সরকার। এই আশঙ্কায় এবার বিধায়কদের বাসে চাপিয়ে খুন্তিতে নিয়ে চলে গেলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন।
কারণ, জেএমএমের কাছে খবর আছে, মহারাষ্ট্রের কায়দায় ঝাড়খণ্ডেও বিধায়কদের কিনে নিতে চাইছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই সেই চেষ্টা দেখেছে ঝাড়খণ্ড। তিন কংগ্রেস বিধায়ক পশ্চিমবঙ্গে টাকাবোঝাই গাড়ি-সহ ধরা পড়েছে। সেই পশ্চিমবঙ্গেই নাকি ক্ষমতাসীন জোটের ৪৯ জন বিধায়ক চলে যেতে পারেন। আর, তাই দেরি নয়। দলের বিধায়কদের তিনটি বাসে চাপিয়ে রাঁচি থেকে খুন্তিতে নিয়ে গেলেন হেমন্ত। সঙ্গে গেলেন নিজেও।
হেমন্ত নিজে মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও খনি এবং পরিবেশ দফতরও তাঁর অধীনে। তার পরও নিজের নামে একটি খনির ইজারা আছে হেমন্তর। যা ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৯ (এ) ধারার বিরোধী। এই কারণে, তাঁর বিধায়কপদ খারিজ করে দেওয়া হোক। বিরোধী দল বিজেপি এই দাবিতে এখন ঝাড়খণ্ডে সরব। বিজেপির সেই দাবি মেনেই ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনের মতামত জানতে চেয়েছিলেন। সেই মতামতও চলে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? তা ঠিক করতে শুক্রবার থেকে জেএমএমের জনপ্রতিনিধি, নেতাদের নিয়ে তিনটি ম্যারাথন বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন।
আরও পড়ুন- নতুন প্রধান বিচারপতির মেয়াদ ৭৪ দিন, আগে কারা অল্পদিন এই পদে ছিলেন?
তা বিধায়কদের বাস চাপিয়ে খুন্তি গেলেন কেন হেমন্ত? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিধায়ক বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল কবে নির্বাচন কমিশনের মতামত প্রকাশ করবেন, সেই অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় নেই। পরিস্থিতি যাই হোক, ঠিক হয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা তার মোকাবিলা করবে। আর, এই কঠিন পরিস্থিতিতে যাতে বিজেপির চাল কার্যকর না-হয়, সেই জন্য সমস্ত বিধায়কের ওপর নজর রাখা জরুরি। এমনিতে চড়ুইভাতির নাম করে বিধায়কদের খুন্তির লাটাতুতে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে মাংস-ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসল উদ্দেশ্য নজরদারি।'
এর আগে শুক্রবারই হেমন্ত অভিযোগ করেন, 'গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে সমস্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।' পরে হেমন্ত টুইট করেন, 'কেন্দ্রের কাছে ঝাড়খণ্ড সরকার এখনও ১.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা পায়। সেই টাকা না-মিটিয়ে ঝাড়খণ্ডের উন্নতিতে বাধা দিচ্ছে বিজেপি। তারপরও যখন তারা দেখছে যে আমার ও গুরুজির কোনও ক্ষতি করতে পারবে না, তখন তারা হয়রান করার চেষ্টা শুরু করেছে।'
Read full story in English