শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার রাস্তা কার্যত ‘বিশ বাঁও জলে’! পুরভোটের মুখে শোভনের কেন্দ্রের দায়িত্ব রত্না চট্টোপাধ্যায়ের কাঁধে তুলে দিল তৃণমূল। পুরভোটে বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে দলের প্রচার থেকে কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করবেন শোভন-পত্নী। শনিবার রত্নাকে পাশে নিয়ে একথা জানালেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে শোভনের উদ্দেশে পার্থর মন্তব্য, ‘‘একজনকে জিতিয়েছিলাম, সে যদি নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে, তাহলে দল তো আর নিষ্ক্রিয় হবে না’’। শোভনের তৃণমূলে ফেরার প্রসঙ্গে এদিনও পার্থ বলেন, ‘‘সেটা তো উনিই বলতে পারবেন’’।
প্রসঙ্গত, পুরভোটের আগে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে তুমুল চর্চা বঙ্গ রাজনীতিতে। গত বছরের ১৪ অগাস্ট তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে যোগ দিলেও পদ্মশিবিরের একাংশের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে কার্যত ‘অন্তরালে’ শোভন। বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে জল্পনা উস্কে গত বছর ভাইফোঁটায় বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে যান ‘কানন’। যদিও তারপরও তৃণমূলের সঙ্গে শোভনের ‘রিইউনিয়ন’ কার্যত ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছে। এরপর কিছুদিন আগে শোভনকে ‘স্বমহিমায় ফেরার’ আর্জি জানিয়ে শহরজুড়ে পদ্ম প্রতীকের ব্যানারে পোস্টার পড়ে। এ নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক। এই আবহে রত্নাকে দায়িত্ব দিয়ে শোভনকে কার্যত পরোক্ষে মমতা বাহিনী বার্তা দিল বলেই ব্যাখ্যা রাজনীতির কারবারিদের একাংশের।
আরও পড়ুন: মমতা প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে গোপন বোঝাপড়া করছেন, বিস্ফোরক মুকুল
এদিন রত্নাকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেহালা পূর্বে যে শূন্যতা সেটা তো দেখতে হবে। দলের সমন্বয়ের কাজ দেখবে রত্না। অনেক কর্মসূচি রয়েছে, সেগুলো এখানে যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা সেটা রত্না দেখবে’’। এরপরই শোভনের নাম না নিয়ে পার্থ বলেন,‘‘একজনকে জিতিয়েছিলাম, সে যদি নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে, তাহলে দল তো আর নিষ্ক্রিয় হবে না’’। দলের দায়িত্ব পেয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পার্থদা আমার মাথার উপর আছে। উনি যেভাবে গাইড করবেন, সেভাবেই কাজ করব’’।
দেখুন: শহরে ছয়লাপ শোভনের পোস্টার, ‘খুশিতে ডগমগ’ বৈশাখী!
এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এটা ওদের দলের ব্যাপার। আমরা কিছু বলব না। আমরা ওঁকে (শোভন) সক্রিয় করার চেষ্টা করব’’।
উল্লেখ্য, রত্নার সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর তিক্ত সম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত। এমনকি, রাজনীতির অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, রত্না তৃণমূলে থাকলে তিনি থাকবেন না বলে শর্ত দিয়েছেন শোভন। রত্নাকে নিয়ে শোভনের আপত্তির কথা স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানানো হয়েছে বলে শোনা যায়। এমন প্রেক্ষিতে শোভনের কেন্দ্রে রত্নাকে যেভাবে তৃণমূল দায়িত্ব দিল, তা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন