একুশের মহারণের আগে দলবদল অব্যাহত বঙ্গে। কখনও বিজেপি আবার কখনও শাসকদল তৃণমূলে অন্য দল থেকে নেতা-কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন। এবার হলদিয়ায় বামফ্রন্টে বড়সড় ভাঙন ধরালেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা। এদিন রামনগরে বঙ্গ বিজেপির যোগদান মেলা কর্মসূচিতে হাজির হলেন বাম দলগুলির ২২ জন নেতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর প্রাক্তন সদস্য শ্যামল মাইতি। সঙ্গে ছিলেন আরএসপির রাজ্য কমিটির নেতা অশ্বিনী জানা এবং সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য অর্জুন মণ্ডলও।
গত লোকসভা ভোটে বামের ভোট গিয়েছিল রামে। একথা এখন মোটামুটি সবারই জানা। বামফ্রন্ট তথা আলিমুদ্দিনের নেতারা যতই বলুন, বামের ভোট গিয়েছিলে বিজেপিতে। আর রাজ্যে ১৮টি কেন্দ্রে জয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বামেদেরও সহযোগিতা ছিল তা অনস্বীকার্য। কিছুদিন আগে রাজ্যে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে বামেরা বিজেপিকে সাহায্য করেছিলেন। একাধিক বাম নেতা-কর্মী দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার কো-অর্ডিনেটর তথা গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী রিঙ্কু নস্কর যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এবার পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির হাত শক্ত করছেন বাম নেতারা।
আরও পড়ুন ‘শুভেন্দু বিজেপিতেই-তৃণমূল ছাড়ছেন সৌগত সহ ৫ সাংসদ’, বিস্ফোরক অর্জুন সিং
যে হলদিয়া বামেদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। একসময় সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণ শেঠের উত্থান হয়েছিল হলদিয়া থেকেই। জ্যোতি বসুর আমলে লালদুর্গ হলদিয়ায় এখন বামেদের লাল নিশান ধরার লোক দিন দিন কমছে। শনিবার আরও বড় ভাঙন ধরিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন ২২ জন সিপিএম-আরএসপি নেতা। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন শ্যামল মাইতি-অশ্বিনী জানারা। পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, "এসব আগাছা দলে থেকে দূর হয়ে গেলেই ভাল। এরা কেউ এখন দলে সক্রিয় নন।" কিন্তু তিনি যাই বলুন, লোকসভার মতো একুশেও বামের ভোট যে রামে যাবে সেই দেওয়াল লিখন মোটামুটি স্পষ্ট, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আলিমুদ্দিনের নেতারা দেখতে পাচ্ছেন?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন