Advertisment

লম্ফঝম্ফই সার, পুলিশকে টপকে নবান্নের বক্সেই ঢুকতে পারল না বিজেপি

হাওড়া ময়দানে মিছিল থেকে বোমা চার্জের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে পিস্তল উদ্ধার করল পুলিশ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিজেপির যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার

ইটবৃষ্টি, বোমা চার্জ, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, লাঠিচার্জ এবং জলকামানের রঙিন জল! বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যুব মোর্চার নবান্ন অভিযানকে ঘিরে কলকাতা ও হাওড়ায় ধুন্ধুমার কাণ্ড। যার ক্লাইম্যাক্সে রঙিন জল ও লাঠি সহযোগে বিজেপি নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ। কোথাও বিক্ষিপ্ত অশান্তি আবার কোথায় পাঁচ মিনিটে ম্যাচ শেষ। ধুন্ধুমার হলেও পুরোপুরি সফল বিজেপির অভিযান, তা বলা যায় না। সেই লক্ষ্মীবারে বিজেপির নবান্ন অভিযান কার্যত ফ্লপ শো-ই। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে বিজেপির মিছিল থেকে বোমা ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের দাবি, মিছিলে এক বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে নবান্নে পৌঁছনোর সবরকম কসরত করেছে বিজেপি। কিন্তু বারবেলায় ব্যর্থই হতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীদের।

Advertisment

এদিন সবথেকে বেশি ধুন্ধুমার হয় হাওড়া ময়দান ও হেস্টিংসে। হাওড়া ময়দানে মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য এবং রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। এই মিছিল ঘিরে ব্যাপ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে দফায় দফায় ইটবৃষ্টি চলে। পাল্টা পুলিশও গলিগুলিতে ঢুকে বেধড়ক মারেন বিজেপি কর্মীদের। অভিযোগ, মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও চার্জ করা হয়। এক বিজেপি কর্মীর পকেট থেকে রিভলভার উদ্ধার করে পুলিশ। প্রায় দেড়-দু ঘণ্টা এখানে খণ্ডযুদ্ধ হয় পুলিশ-বিজেপির।

আরও পড়ুন “বিজেপি সন্ত্রাসবাদীদের দল, পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিক”, সরব ফিরহাদ

হেস্টিংসে মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন সদ্য বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ পাওয়া মুকুল রায়, বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সাংসদ অর্জুন সিং, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। লকেটের অভিযোগ, পুলিশের লাঠির ঘায়ে বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের মাথা ফেটে যায়। এখানেও পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইট ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা পুলিশও লাঠিচার্জ করে। এখানে প্রায় ৩০ মিনিট খণ্ডযুদ্ধ পুলিশের। কিন্তু বেশিদূর এগোতে পারেননি বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

publive-image ধুন্ধুমার অবস্থা। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

সাঁতরাগাছির তরফ থেকে নবান্নের দিকে আসা মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। উন্মত্ত বিজেপি কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের রুখতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। বেগুনি রঙের সেই জল ছেটানোর পর অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। গুরুতর আহত হন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাঁকে দেখতে যান বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। সায়ন্তনদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ইচ্ছাকৃত লাঠিচার্জ ও জলকামান ছিটিয়েছে। পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়তে হয়।

publive-image পুলিশের সঙ্গে বচসায় অর্জুন সিং। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

তবে হাওড়া ব্রিজের মিছিলটি মাত্র পাঁচ মিনিটেই রণেভঙ্গ দেয়। এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। পুলিশের লাঠির ঘায়ে মেনন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিজেপি। এই দিকে মিছিলটি বেশি দূর এগোতে পারেনি। পুলিশের ব্যারিকেডের কাছে পৌঁছতেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। বস্তুত, এদিন স্যানিটেশনের কারণ দেখিয়ে নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। সেই অর্থে বিজেপির নবান্ন অভিযান শুরুতেই জৌলুস হারিয়েছিল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু গর্জন করলেও সেভাবে এদিন পুলিশের সামনে সেইভাবে বর্ষণ করতে পারেনি বিজেপির নেতা-কর্মীরা। সেই অর্থে সব দিক বিচার করে ব্যর্থই বলা চলে এদিনের নবান্ন অভিযান।

publive-image বিজেপি কর্মীদের জলকামান দিয়ে ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ। এক্সপ্রেস ফটো- পার্থ পাল

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

bjp Nabanna
Advertisment