Advertisment

ব্যক্তিগত মতামত: সরকার ও দল পৃথকীকরণের কৌশলী চেষ্টায় তৃণমূল?

দল শাসন ক্ষমতায় থাকলে সরকারের কর্মকান্ডে দলের প্রভাব থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কার্যকলাপে দল যেন সরকারের সঙ্গে মিশেই যায়।

author-image
Joyprakash Das
New Update
announcement of the post of coordinator in tmc

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক ব্যানার্জী।

দল শাসন ক্ষমতায় থাকলে সরকারের কর্মকান্ডে দলের প্রভাব থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কার্যকলাপে দল যেন সরকারের সঙ্গে মিশেই যায়। পৃথক অস্তিত্ব ধরে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। বামফ্রন্ট আমলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিণত হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারে। তারপর ২০১১-তে রাজ্যে ক্ষমতায় পরিবর্তন ঘটে। এবার তৃণমূল সরকার না লিখলেও নানা ক্ষেত্রেই দল ও সরকারকে পৃথক করা যায় না। বিরোধীরা নানা সময়ে অভিযোগও করেছে, দলীয় সভা থেকে সরকারি ঘোষণা বা সরকারি দফতরে রাজনৈতিক সাক্ষাৎ। ২০২১ -এর বছর শুরুতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা পদক্ষেপ দল ও সরকারের পৃথক অস্তিত্ব প্রকাশের কৌশল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisment

করোনা পরিস্থিতির কারণে পুরনির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল বঙ্গ বিজেপি। একাধিকবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভোট বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। আদালতে মামলাও হয়েছে। রাজ্য সরকার বা তৃণমূল কংগ্রেস কখনও দাবি করেনি নির্বাচন বন্ধ করার। পরবর্তীতে ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে পৃথক করোনা বিধি চালু করার ঘোষণার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত মন্তব্য বলে কার্যত পুরনির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। যদিও পরবর্তী সময় হাইকোর্টের নির্দেশ ও রাজ্য সরকারের মতামত নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৩ সপ্তাহ নির্বাচন পিছিয়ে দেয়।

অভিষেকের মতামত যে 'ব্যক্তিগত' নয়, তা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়। রাজনৈতিক মহলের মতে, মন্তব্য ব্যক্তিগত কীনা তা নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য যে রাজ্য সরকারের থেকে পৃথক তা কিন্তু স্পষ্ট ছিল। পরবর্তীতে তৃণমূল যুব নেতাদের অভিষেককে সমর্থন সেই বিষয়টা আরও পরিস্কার করে দেয়। যুবদের কেউ আবার 'যুবরাজ' প্রশাসনিক পদে নেই বলে আক্ষেপও করেন। সরকার আর তৃণমূল কংগ্রেসের পৃথক সত্বা স্পষ্ট করার প্রক্রিয়া স্পষ্ট।

ডায়মন্ডহারবারে পৃথক ভাবে ৫০ হাজার করোনা টেষ্ট করা হয়েছে। এমন উদ্যোগ রাজ্যের কোথাও হয়নি। সেদিন ওই সংসদীয় কেন্দ্রে পজিটিভিটি রেট ছিল ২.১৬। পরে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দাবি করলেন, রাজ্যে করোনা সংক্রমণে পজিটিভিটি রেট ৩ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনতে হবে। এদিকে রাজ্য সরকারের কান্ডারী তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর গত ১১ বছরে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও পদাধিকারী এমন সব দাবি রাজ্য সরকারের জানায়নি। এটা সরকারের সঙ্গে দলের পৃথক অস্তিত্ব তুলে ধরার কৌশল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

তৃণমূল তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে। বিজেপির একাধিক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, পাশাপাশি এই মুহূর্তে রাজ্য বিজেপি 'গৃহযুদ্ধ'-এ বিধ্বস্ত। তৃণমূলের কোন্দল সামনে এলেও প্রচারে থাকছেন সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এদিকে রাজ্যে গত তিন দিন টানা কমেছে করোনা সংক্রমণ। কমেছে পজিটিভিট রেটও। অভিজ্ঞ মহলের মতে, মোদ্দা কথা সরকারে থেকেও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি-দাওয়া জারি রাখার কৌশল নিয়েছে। পরবর্তীতে তা আরও প্রকাশিত হবে।

abhishek banerjee Mamata Government Mamata Banerjee tmc
Advertisment