ইস্তফার যেন হিড়িক পড়েছে মমতা শিবিরে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে র দলত্যাগের জল্পনা উঠতেই বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন শুভেন্দুঘনিষ্ট এবং রাজ্যের আরও কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদ। শনিবার মেদিনীপুরে শাহের সভা। সেখানেই থাকার কথা শুভেন্দুর। কী হতে চলেছে?
জেলার একটি পার্টি অফিসে তৃণমূল কর্মীরা তখন খবর দেখতে মগ্ন। দলের মধ্যে এমন আবহ তৈরি হবে এ যেন তাঁরা স্বপ্নেও ভাবেনি। ক্ষোভ, জল্পনা, সমালোচনায় যেন তৃণমূল আজ ক্ষতবিক্ষত। শুভেন্দু, শীলভদ্র, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কবিরুল ইসলাম... একের পর এক পদত্যাগ। অন্যদিকে, আসানসোলের বিধায়ক জীতেন্দ্র তিওয়ারি পদত্যাগ করলেও শুক্রবার রাতেই নিজের অবস্থান বদলেছেন। জানিয়েছেন তিনি তৃণমূলেই আছেন। দলে হচ্ছেটা কী?
এই উত্তর খুঁজছেন তৃণমূল কর্মী সুখেন সমাদ্দারও। তিনি বলেন, "আপনারা তো দেখতে পাচ্ছেন কী হচ্ছে। শুভেন্দু দলের একজন বড় নেতা। দলের উচিত ছিল তাঁর ক্ষোভ মিটিয়ে দেওয়ার। কত কত জন ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তবে আমি আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেছি দুর্দিনেও তিনি সামলে নেন। সত্যি কথা বলে তৃণমূলের অন্দরে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিজেপি তারই সুযোগ নিচ্ছে।"
আরও পড়ুন, "নেতা গেলে কিছু যায় আসে না, কর্মীরাই সম্পদ", ভাঙন রুখতে দলকে বার্তা মমতার
কেবল সুখন সমাদ্দার নন, দল না ছাড়ার মতো সাহসী তালিকায় রয়েছেন আরও অনেকেই। কিন্তু মুখে কিছু না বললেইমনে মনে সকলেই প্রমাদ গুনছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা নিয়ে। জেলায় জেলায় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে এই আবহে অনেকেই দলবদলের রাস্তায় হাঁটবেন এমনটাই আশংকার।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত সরকার (৬৭) অভয়বাণী দেন জেলার তৃণমূল কর্মীদের। তিনি বলেন, "আমরা সকলকে বলছি প্যানিক না করতে। অনেক অনুগামী এখন দল ছাড়বে। এটা ঠিক যে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়েই দলের অন্দরে বিভেদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমরাও শনিবারের জন্য অপেক্ষা করছি। দেখি কারা কারা দল ছাড়ে। কী প্রভাব আসতে চলেছে দলে।" যদিও ঘাসফুল শিবিরের অনেকের মত মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারাও দল ত্যাগ করে বিজেপিতে গিয়েছেন কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের তাতে কিছু যায় আসেনি। তাই শুভেন্দু গেলেও ট্রেন্ডে বদল হবে না।
আরও পড়ুন, মধ্যরাতে শহরে শাহ, বিমানবন্দরে সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়
তৃণমূলের পার্টি অফিসের অনতিদূরে সিপিআইএম-এর পার্টি অফিস। সেখানে তখন হাসির রোল। ষাট বছরের সিপিআইএম কর্মী-সমর্থক মহম্মদ জালালউদ্দিন বলেন, "আমরা দেখছি আর হাসছি। দেখুন কীভাবে নেতারা সব তৃণমূল ছাড়ছে। বিজেপি তৃণমূল দুই দলই বাংলার মানুষকে ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছে। তবে তৃণমূলের এখন শেষের সময়।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন