শনিবার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে সভানেত্রী রয়েছেন তিনিই। ২০ সদস্যের এই কমিটিতে অনেকেরই জায়গা হয়নি। আবার অনেক নতুন মুখকে জাতীয় রাজনীতিতে তুলে ধরা হয়েছে। নবীন-প্রবীণের মিশেলে এই কমিটি তৈরির ফলে দলের সমস্ত শীর্ষপদের অবলুপ্তি হল।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অভিষেকের সঙ্গে সখ্যতা যাঁদের তাঁরাই রয়েছেন কমিটিতে। একদিকে, যেমন দলীয় আনুগত্য এবং নিষ্ঠার দাম পেলেন অনুব্রত মণ্ডল, তেমনই মমতার বহু যুদ্ধের সৈনিক সৌগত রায় বাদ পড়লেন। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল প্রথম দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারক কমিটিতে এলেন।
প্রথম যে নামটা উল্লেখযোগ্য সেটা হল লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মাসে ডায়মন্ড হারবার মডেল এবং করোনার জন্য ভোট স্থগিত রাখার আর্জি জানাতেই অভিষেকের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন শ্রীরামপুরের তিনবারের সাংসদ। তার পর চলে বাকযুদ্ধ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে কলকাতায় এবং শ্রীরামপুরে প্রকাশ্যে অভিষেক অনুগামীরা কুশপুতুল পোড়ায় কল্যাণের। তিনি কমিটি থেকে বাদ গিয়েছেন।
আরও পড়ুন ‘দিদি’-ই দলের শেষ কথা! মমতাকে সভানেত্রী করে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতি গঠন
সৌগত রায় এবং ডেরেক ওব্রায়েন, লোকসভা এবং রাজ্যসভায় দলের শীর্ষ নেতা। তাঁরাও এই কমিটিতে নেই। ডেরেক তো রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা। সর্বভারতীয় স্তরে দলের মুখপাত্র। কিন্তু তাঁকে নয়া কমিটিতে রাখা হয়নি। জায়গা হয়নি কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর। তিনি গোয়ায় দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁকে না রাখা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন চার পুরনিগমের ভোটেও এড়ানো গেল না অশান্তি, দিনভর ‘ভুয়ো’ ভোটারের দৌরাত্ম্য, চলল গুলি
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ওয়ার্কিং কমিটি দেখেই সংগঠনে রদবদলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে যেভাবে অভিষেক-অনুগামীরা দলের মধ্যে সরব হয়েছেন, তাতেই জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণা করে এবং শীর্ষস্তরের সব পদ অবলুপ্ত করে ভাইপো অভিষেককেই গুরুত্ব বেশি দিলেন দলনেত্রী মমতা। যে দুজনের সঙ্গে দলের মধ্যে বিরোধ প্রকট হচ্ছিল অভিষেকের, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটিতে তাঁর নাম না থাকা একপ্রকার চরম বার্তা হতে পারে। কমিটিতে রয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, যশবন্ত সিনহা, অসীমা পাত্র।