কলকাতা পুরসভার ভোট বাকি আর মাত্র চার দিন। প্রচারের সময়সীমা শেষ হতে চলেছে আগামিকাল। সম্প্রতি পরশি রাজ্য ত্রিপুরায় আগরতলা পুরসভা নির্বাচনে প্রচারের যে হাইভ দেখা গিয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে তার ছিঁটেফোটাও দেখা যাচ্ছে না। বিশেষত, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের প্রচারে গেরুয়া শিবিরের 'গা-ছাড়া' মনোভাব দেখতে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। যখন কলকাতা নগরনিগম দখলে মহারণ চলছে তখন সিঙ্গুরের কৃষক আন্দোলনে বিজেপি নেতৃত্বের 'ঐক্যবদ্ধ' আন্দোলনে হতবাক অভিজ্ঞ মহল। কেন এই সময়কেই বেছে নিল রাজ্য নেতৃত্ব তা নিয়েও সন্দিহান তাঁরা।
২০০৬ বিধানসভা নির্বাচনে ২৩৫ আসন পেয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। প্রবল প্রতাপে বিরোধীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য শুরু করেছিল বাম শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ। কিন্তু হতোদ্যম না হয়ে সিঙ্গুর ইস্যুতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরের জোড়া আন্দোলনের ফালায় ধরাশায়ী হয়ে যায় বামফ্রন্ট। সেই সিঙ্গুর থেকে এবার কৃষক আন্দোলনের সূত্রপাত করল বিজেপি। মূলত পাঁচটি ইস্যুতে তিন দিনের আন্দোলন চলবে সিঙ্গুরে।
আরও পড়ুন- বিপুল বরাদ্দ-অনেক ঋণ, তবুও কলকাতায় নিকাশি যন্ত্রণা অব্যাহত, কেন? জানুন
প্রথম দিনের কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। সিঙ্গুর থেকে হুঙ্কারও ছেড়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এদিকে শেষ দফার প্রচার চলছে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে। এই নির্বাচনে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব প্রচারে অংশ নিলেই একটা গা-ছাড়া মনোভাব লক্ষ্য করছে রাজনৈতিক মহল। কলকাতা পুরসভার ভোট দরজায় টোকা মারছে, প্রচারও শেষপর্বে, তখন সিঙ্গুরে আন্দোলনের সূচনা কেন? তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরেই কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তাহলে কী কলকাতা পুরনির্বাচনকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না গেরুয়া শিবির। নাকি আগাম ভোটের ফলাফল আঁচ করতে পেরেছে গেরুয়া শিবির? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
কৃষকদের টানা আন্দোলনের জেরেই তিন কৃষি বিল বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে কৃষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছে বঙ্গ বিজেপি। তারপর তিন ব্যাপী আন্দোলন শুরু করেছে রাজ্যের কৃষি বিপ্লব ক্ষেত্র সিঙ্গুরে। কৃষি বিল প্রত্যাহারের পর দেশব্যাপী গেরুয়া শিবিরের ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামাও জরুরি ছিল মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের বাকি কর্পোরেশন ও পুরসভার ভোট ঘোষণা হতে চলেছে। কলকাতা পুরসভার ভোটের ফলের প্রভাব ওই পুরসভাগুলির নির্বাচনের ওপর পরতে পারে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। রাজনৈতিক মহলের মতে, তবুও মহানগরের নির্বাচনে বিজেপি সেভাবে প্রচারে ঝড় তুললো না কেন? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন