বন্ধ দরজা। বোর্ড ঝুলছে, ভিতরে প্রবেশ নিষেধ। তবু মানতে চায় না ভোলা মন। এ যেন জোর করে নিমন্ত্রণ নেওয়া। দলনেত্রীর ঘোষণার পরও কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হচ্ছে, 'তৃণমূলকেই সমর্থন করব। তৃণমূলেই থাকব।' নির্দল কাউন্সিলরদের দলে নেওয়া নিয়ে আপাতত বাধ সেধেছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিয়রে বাকি রাজ্যের আরও শতাধিক পুরসভার নির্বাচন।
কলকাতা পুর নির্বাচনে বিরোধীদের মধ্যে সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে বিজেপি, নির্দল প্রার্থীরাও পেয়েছে সমসংখ্যক তিনটে আসন। এখনও আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ওই তিন মহিলা নির্দল কাউন্সিলর। ভোটের ফলপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এক কাউন্সিলরের স্বামী আবার ফিরহাদ হাকিমের হুড খোলা বাসেও সঙ্গী হয়েছিলেন। কিন্তু এই মুহূর্তে নির্দল কাউন্সিলরদের আশায় জল ঢেলেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই নির্দেশের পর কী বলছেন তৃণমূলপন্থী ওই নির্দল কাউন্সিলররা?
তিন কাউন্সিলরের কেউই নিজে ফোন ধরেননি। ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী রুবিনা নাজ। তিনি হারিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী আখতারি নিজামিকে ৩৬০ ভোটের ব্যবধানে। এই কাউন্সিলরের স্বামী ফোন ধরে দায়িত্ব নিয়ে কাউন্সিলরের বক্তব্য জানিয়ে দিলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে। তিনি বলেন, 'আমরা দিদি ছাড়া কাউকে জানি না। দিদিকেই সমর্থন করব। তৃণমূলকেই সমর্থন করব। আমরা দলের সঙ্গেই আছি। প্রয়োজনে দলের কাছে আবদেন করব।' রুবিনা নাজ পুরসভা বা বরোতে তৃণমূলকেই সমর্থন করবেন বলেও জানিয়ে দিলেন তিনি।
১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী পূর্বাশা নস্কর তৃণমূল প্রার্থী শিবনাথ গায়েনকে ৫০৯ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয় পান। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরে নিজেকে কাউন্সিলরের পিএ পরিচয় দেন জনৈক। তিনি প্রথমে জানিয়ে দেন, 'তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য় নিয়েই বৈঠক করছেন কাউন্সিলর।' তারপরই তিনি বলেন, 'সময় হলে এই বিষয় নিয়ে ম্য়াডাম(কাউন্সিলর) বলবেন'। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে আয়েশা কনিজ নিকটতম তৃণমূল প্রার্থীকে ২,১১১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন। এই নির্দল কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মহম্মদ আহমেদ জানিয়ে দেন, 'অফিসে ফোনটা রয়েছে। আমি কিছু বলতে পারব না।'
তৃণমূল প্রার্থীদের হারিয়ে সহজেই সেই দলে যোগ দিয়ে দেবেন বলে ভেবেছিলেন নির্দল কাউন্সিলররা। তবে তৃণমূল সুপ্রিমোর ঘোষণার পর তিন কাউন্সিলরের কেউই আপাতত মুখ খুলতে চাইছেন না। নিজেরা কেউ ফোন ধরছেন না। রাজনৈতিক মহলের মতে, সামনে একাধিক পুরসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচন না মেটা পর্যন্ত প্রকাশ্যে এঁদের তৃণমূলে যোগদানে সমস্যা রয়েছে।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন