তুমুল বিরোধিতা সত্ত্বেও পরিবারের অনেকেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন। তাই নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের কটাক্ষের মুখে পড়তে হচ্ছে। কথায় আর কাজে মিল নেই বলে সমালোচনাও শুনতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে ভিন্ন সুর বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলায়। বলে দিলেন, তিনি মোটেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের বিরোধী নন।
পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড করিয়েছেন এই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘আমি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের বিরোধিতা করছি না। আমি সরকারের প্রতারণার বিরোধিতা করছি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করার সুযোগ পেলে আমিও করব।’’ একইসঙ্গে নিজের অবস্থানে অনড় থেকে তিনি প্রশ্ন ছোঁড়েন, “কার্ড পেলেন অথচ সুযোগ পেলেন না, তাহলে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড মাথায় নিয়ে শুয়ে থাকলে কি জ্বর কমবে?” উল্লেখ্য, ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে রীতিমতো লাইন দিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়েছেন দিলীপ ঘোষের ছোট ভাই হীরক ঘোষ এবং খুড়তুতো ভাই সুকেশ ঘোষের পরিবার। কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প নিয়ে যখন জোরকদমে প্রচার করছে বিজেপি, তার মধ্যেই এই ঘটনা অবাক করেছে গোটা বাংলাকে।
প্রসঙ্গত, হীরক ও সুকেশ ঘোষ রক্তের সম্পর্কেই ভাই নন, রীতিমতো বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। হীরক ঘোষ গোপীবল্লভপুর-১ মণ্ডলের সভাপতি এবং সুকেশবাবু আরও উঁচু পদে রয়েছেন। তিনি আবার জেলা সহ-সভাপতি। তাঁরাই যখন লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করাচ্ছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক হইচই।
আরও পড়ুন “একজন মহিলার জন্য মন্ত্রিত্ব-সন্তানদের ছেড়েছেন শোভন”, পাল্টা তোপ রত্নার
গোপীবল্লভপুরে-১ বল্কের কুলিয়ানা গ্রামে দিলীপ ঘোষের পৈতৃক বাড়ি। সেই বাড়িতে থাকেন দিলীপ ঘোষের মা পুষ্পলতা ঘোষ, ছোট ভাই হীরক, তাঁর স্ত্রী গঙ্গা ঘোষ এবং ছেলে অরিন্দম। হীরক ঘোষের মেয়ে অর্পিতা হাওড়ার হাসপাতালে নার্সিস্কুলের ছাত্রী। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা খুড়তুতো ভাই সুকেশ ঘোষ, স্ত্রী প্রতিমা ঘোষ, ছেলে অভি ও দুই মেয়ে অপরূপা-অনুরূপা। রাজ্যের দুয়ার সরকার কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করে দুই পরিবার।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে হীরক ঘোষের স্ত্রী-ছেলে এবং সুকেশ ঘোষের গোটা পরিবার লাইন দিয়ে ছবি তোলেন। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডও হাতে পেয়েছেন তাঁরা। হীরকবাবুর বক্তব্য, “ছবি তোলার দিন আমি মেয়েকে হাওড়ায় ছাড়তে গিয়েছিলাম। তাই ওই দিন ক্যাম্পে যেতে পারিনি। আমার স্ত্রী ও ছেলে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়েছে। তবে, এই কার্ড এখনও পর্যন্ত কাজে লাগেনি।” সুকেশ ঘোষ আবার বলেছেন, “বাড়ির সবাই কার্ড করতে বলছিল, তাই আবেদন করেছিলাম। পরিবারের সবাই কার্ড পেয়েছে। তবে কী সুবিধা পাব জানি না, লাভ-ক্ষতি কী হবে সেটা পরের কথা।”