বোলপুরের জামবুনির জনসভা থেকে ফের বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি, শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক বিধায়ক দলত্যাগ করে বিজেপিতে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ মমতার আক্রমণ, "টাকা দিয়ে এমএলএ কেনা যায়, তৃণমূলকে কেনা যায় না।" তিনি বলেছেন, "টাকা দিলে গরিব মানুষ নিয়ে নিন, ভোটে ওদের বিদায় দিন। টাকা দিয়ে কয়েকটা এমএলএ কিনে নিলে, তৃণমূলকে কেনা যায় না।"
এদিন বোলপুর লজ থেকে জামবুনি মোড় পর্যন্ত ৪ কিমি পদযাত্রা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সকাল থেকেই সেই কর্মসূচি ঘিরে বোলপুরে ছিল উৎসবের মেজাজ। রাস্তার দুপাশে অজস্র মানুষের ভিড় আর মাঝখান দিয়ে হেঁটে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সবাইকে হাতজোড় করে নমস্কার জানাতে জানাতে চিরাচরিত কায়দায় পদযাত্রা করেন মমতা। এদিন জনজোয়ারে ভাসে বোলপুর। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিধন্য এই ভূমিতে রবীন্দ্র সংস্কৃতিকে সঙ্গে নিয়ে মিছিলে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী। বাউল শিল্পী, আদিবাসী নৃত্য-সহ রবীন্দ্র নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল এগিয়ে চলে। জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, বীরভূম থেকে ৩ লক্ষ লোক এসেছে। বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়কে সঙ্গে নিয়ে পদযাত্রা করেন মমতা।
আরও পড়ুন “উনি ৩ বার তিন ধর্মে বিয়ে করেছেন”, অমর্ত্য সেনকে ‘নীতিজ্ঞান’ নিয়ে তোপ দিলীপের
এরপর জামবুনি মোড়ের কাছে শেষ হয় পদযাত্রা। এদিন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচিল কাণ্ড ও অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্ক নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, "বিজেপির মার্কামারাকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য করে নিয়ে এসেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুরে আমরা এসব করি না।" আরও বলেন, "কিছুদিন ধরে কুকথায় রবীন্দ্রনাথ-অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করা হচ্ছে। নতুন করে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখানোর দরকার নেই। সোনার বাংলার স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথই। বিশ্বভারতীর, শান্তিনিকেতনের অপমান করা হচ্ছে। বিশ্বভারতীতে ঘৃণ্য রাজনীতির আমদানি করা হয়েছে। ঘৃণ্য-বিদ্বেষমূলক রাজনীতির আমদানি হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে একবার চাই ফাইভ স্টারের খাবার। অথচ দেখাচ্ছে আদিবাসী বাড়ির খাবার। আদিবাসীদের অপমান করার অধিকার নেই। এদের দলীয় পতাকা বহন করে এজেন্সির লোকেরা।"
আরও পড়ুন বিজেপি ছাড়লেন আদিবাসী নেতা, মোদীকে চিঠি লেখার পরই পদত্যাগ
বক্তব্যের শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমার একটাই পরিবার, মানুষের পরিবার, আর কেউ নেই। গ্রামে বহিরাগত দেখলে, পুলিশে খবর দিন। ভো কাট্টা করে বিরোধীদের উড়িয়ে দিন। একুশ আমাদের গর্ব, একুশ আমাদের পথ দেখাবে।" এদিকে, ক্যাম্পাসে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বেআইনি জমায়েতের অভিযোগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শান্তিনিকেতন থানার ওসিকে অভিযোগ জানাল। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন