ডুমুরজলার সভা থেকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সুর চড়িয়ে বললেন, ‘২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কলকাতা আর দক্ষিণ ২৪ পরগনা আমরা ফাঁকা করব। তৃণমূল কংগ্রেস কোম্পানি করার মতো লোক থাকবে না।’ শুভেন্দুর পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ,বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষালরা শনিবারই বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তৃণমূলে বড়সড় ভাঙল ধরাবে গেরুয়া বাহিনী। রবিবার হাওড়ায় শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি ঘিরে তাই দল বদলের জল্পনা কয়েকগুণ বাড়ল।
এদিন তৃণমূল নেত্রী ও যুব তৃণমূল সভাপতিকে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতাকে আক্রম শানিয়ে তিনি বলেন, ‘নেতাজি বলেছিলেন, দিল্লি চলো আর আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন দেশে চারটি রাজধানী করতে হবে। বাংলাদেশের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। ডাঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যদি না থাকতেন আমরা কেউ পশ্চিমবঙ্গের বা ভারতবর্ষের অধিবাসী হতে পারতাম না।’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এদিনও তোলাবাজির অভিযোগ তোলেন শুভেন্দবাবু। স্লোগান তোলেন 'তোলাবাজ ভাইপো হঠাও'। বাংলায় এবার ভোটে পরিবর্তন নিশ্চিৎ বলে ঘোষণা করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান মঞ্চে রবিবার শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘২০০৪ সালে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমি একসঙ্গে লড়াই শুরু করেছিলাম। সেইদিন থেকে আমরা মানসিকভাবে এক জায়গায় ছিলাম। আমাদের মধ্যে একটা সমঝোতা ছিল আমরা বাংলার ভাল জন্য কাজ করব, একসঙ্গে কাজ করব। তাই ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু (বিজেপিতে) এসেছিল। আজ রাজীব এল। আমাদের বৃত্ত পরিপূর্ণ হল।’
২০১১ সালে পরিবর্তনের পর থেকে তৃণমূলে পুরনো নেতা-কর্মীরা কদর পান না। অভিযোগ অনেকের। দলে পুরনোদের সম্মান দিয়ে সক্রিয় করে তোলার কথা এর আগে একাধিকবার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে কতটা কাজ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এদিন ডুমুরজলায় বর্ষীয়ান রাজনীতিক বাণী সিংহ রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। শাসক দলে পুরনোদের সম্মান না পাওয়ার বিষয়টি উস্কে শুভেন্দু বলেছেন, ‘তৃণমূল যেদিন তৈরি হয়েছিল সে সময় যদি প্রথমজন মুকুল রায় হন, তা হলে দ্বিতীয়জন ছিলেন বাণী সিংহ রায়। তিনিই আজ আমাদের দলে চলে এলেন। আস্তে আস্তে ভালো লোকেরা এদিকেই (বিজেপি) আসবেন।’
কেন্দ্র-রাজ্যে এক সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে শাসন ক্ষমতায় এলে এ রাজ্যে সর্বপ্রথম ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প চালু হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তৃণমূল ত্যাগী গেরুয়া দলের হেভিওয়েট নেতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন