এবার শুভেন্দু অধিকারী। গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার এক মাসের মাথায়। সরাসরি মেরুকরণের পথে হাঁটলেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন হিন্দু ভোটই তাঁর মূল ভরসা। সেই সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটেই নন্দীগ্রামে জয়ী হবে বিজেপি। নন্দীগ্রাম লাগোয়া খেজুরির মঞ্চে দাঁড়িয়েই সেই ঘোষণা করলেন।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর 'কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে' করেছেন, 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি তো রয়েছেই, কিন্তু সরাসরি এই প্রথম ধর্মীয় মেরুকরণের ইঙ্গিত দিলেন। শুধু কাদের ভরসায় বিজেপি জয় পাবে তা বলেননি। ৬২ হাজারের ওপর ভরসা করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হচ্ছেন সেকথাও জানিয়ে দিয়েছেন খেজুরির জনসভায়। কারা এই ৬২ হাজার ভোটার তা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথাও নয়। তাও বুঝিয়েছেন বাকি ২ লক্ষ ১৩ হাজারের কথা বলে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার এক মাসের মাথায় শুভেন্দু সরাসরি মেরুকরণের পথে হাঁটলেন।
আরও পড়ুন, ‘এখন থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর লেটার হেড ছাপিয়ে রাখুন’, মমতাকে নিশানা শুভেন্দুর
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহা-সহ বিজেপির একটা বড় অংশ সভা-সমাবেশে মেরুকরণের পথে হাঁটেন না তা নয়। তাঁরা সরাসরি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কেও এই নিয়ে নিশানা করেন। নানা ধরনের বিশ্লেষণ প্রয়োগ করেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী একেবারে নির্দিষ্ট বক্তব্যের মধ্য় দিয়ে একটা বিধানসভায় ভোটারদের সংখ্যা দিয়ে মেরুকরণ করে দিলেন।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজের নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার পর দিনই এমন বক্তব্য রেখে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল নিয়েছেন শুভেন্দু। ৫০ হাজারে হারানোর কথা বলেই আজ সংখ্যাতত্ব দিয়ে বোঝালেন কেন নন্দীগ্রামে বিজেপি জয় পাবে? আসলে তিনি নিজেই ভরসা করছেন ২ লক্ষ ১৩ হাজারের ওপর। তবে শুভেন্দু যে ৬২ হাজারেও সিঁদ কাটবেন সেকথা বলতেও ছাড়েননি।
আরও পড়ুন, এবার নাম করেই অভিষেককে 'তোলাবাজ ভাইপো' বলে তোপ শুভেন্দুর
রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কর্মীদের মনোবল বাড়াতে যে টোটকার আশ্রয় নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো সেখানেই আঘাত করতে চাইছেন শুভেন্দু{ এ ব্যাপারে সময় নষ্ট করতে রাজ নন তিনি। সোমবার বলেছিলেন ৫০ হাজার ভোটে হারবেন মাননীয়াকে। এদিনও নন্দীগ্রাম আন্দোলন স্মরণ করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, মমতা অনেক কিছুই জানেন না। মিথ্যা বলছেন বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। মোদ্দা কথা, তৃণমূল কর্মীদের মনোবলে আঘাত করে বিজেপি কর্মীদের চাঙ্গা করাই ছিল শুভেন্দুর উদ্দেশ্য। তবে তৃণমূল নেত্রীকে পরাজয়ের নিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের ওপর জোর দিয়েছেন শুভেন্দু।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন