একদিকে 'কল্পতরু' কিচেন, অন্য দিকে 'সবকি রসোই'। ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভার অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ও দেশের বিভিন্ন শহরে রান্নাকরা টাটকা খাবার সরবরাহ করছে টিম পিকে। তবে করোনা মোকাবিলায় তৃণমূলের অন্য নেতা-মন্ত্রীদের দেখা গেলেও তরুণতুর্কী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দেখা মিলছে না। তাহলে তিনি কী করছেন? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের অন্দরমহলে।
করোনা মোকাবিলায় লকডাউনে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন এরাজ্যের বাসিন্দারা। সাধারণ মানুষ দিশা হারা হয়ে পড়েছেন। বেশিরভাগ মানুষেরই নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা। এই পরিস্থিতিতে ভরসা শুধু সরকারি রেশন। তাছাড়া কোথাও কোথাও নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সাধারণ মানুষ হিসেব কষছেন কে পাশে আছেন, আর কে পাশে নেই।
একদিকে তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কল্পতরু' কিচেন ডায়মন্ডহারবারের বাসিন্দাদের রান্না খাবার তুলে দিচ্ছে। শুধু ওই লোকসভা কেন্দ্রের বাসিন্দাদেরই নয়, সেখানে আটকেপড়াদেরও জুটছে 'কল্পতরু'-র খাবার। যোগাযোগের জন্য দেওয়া হয়েছে ফোন নম্বর। এই কমিউনিটি কিচেন শুরুর আগে টুইটে তা জানিয়েছিলেন খোদ অভিষেক।
আরও পড়ুন: করোনায় তথ্য গোপন করছে রাজ্য, চলছে রাজনীতি, বঙ্গ বিজেপির নালিশ রাজ্যপালকে
করোনা আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম শুধু এই রাজ্যে নয় দেশের নানা শহরেও রান্না খাবার নিয়ে হাজির হচ্ছে সাধারণের কাছে। ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি বা আই প্যাক এই প্রকল্পের নাম দিয়েছে 'সবকি রসোই'। এক্ষেত্রে যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর রয়েছে। রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন, তিনি যে শুধু রাজনীতির কৌশল রচনা এবং প্রয়োগেই থাকেন এমন নয়, বিপদের সময়ও মানুষের পাশে রয়েছেন সেই বার্তাই দিতে চেয়েছে টিম পিকে। কিন্তু অনেকেই খোঁজ করছেন, শুভেন্দু আধিকারীর বিষয়ে।
ইতিমধ্যে করোনা প্রতিরোধ তহবিলে ডান-বাম সহ প্রায় সমস্ত রাজনীতিক সাংসদ বা বিধায়কের উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ প্রদান করেছেন। কেউ বা তাঁদের বেতন থেকে করোনা তহবিলে অর্থ সাহায্য করেছেন। সূত্রের খবর, মূলত দুই মেদিনীপুর ও জঙ্গলমহলে সরাসরি নিজের অনুগামীদের নামিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁরাই নিত্য প্রয়োজনী দ্রব্য ও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন সাধারণের কাছে। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এক অনুগামীর বক্তব্য, "মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম, বেলপাহাড়ী, লালগড়, সাকরায়েল, জামবনী, ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের জন্য চাল, ডাল, আলু, বিস্কুট, তেল, মুড়ি, ডেটল, সাবান পাঠিয়েছেন। এছাড়া নন্দীগ্রাম ১ ও ২ নং ব্লকের ১৭টি অঞ্চলের পুরোহিত ও ইমামদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন। এভাবেই দাদা প্রতিদিন নীরবে কাজ করছেন।" শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের বক্তব্য, "করোনা মোকাবিলায় প্রচারের আড়ালে থেকে কাজ করছেন তিনি। কিন্তু দাদা প্রচারে আসতে চান না।" রাজনৈতিক মহলের মতে, এই নীরবতায় অনেক প্রশ্নের জবাব লুকিয়ে আছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন