অনুগামী রাজনীতির ধারাই বদলে দিয়েছেন শুভেন্দু সমর্থকরা

রাজনীতি আর অনুগামী যেন সমার্থক শব্দ। তা যদি হয় কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি। তবে অনুগামী রাজনীতিকে অন্য মাত্রা দিয়েছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্টরা।

রাজনীতি আর অনুগামী যেন সমার্থক শব্দ। তা যদি হয় কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি। তবে অনুগামী রাজনীতিকে অন্য মাত্রা দিয়েছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্টরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রাজনীতি আর অনুগামী যেন সমার্থক শব্দ। তা যদি হয় কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি। তবে অনুগামী রাজনীতিকে অন্য মাত্রা দিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্টরা। একদিকে যেমন সোশাল মিডিয়ায় সক্রিয় অনুগামীরা তেমনি মাঠে-ময়দানে নেমে সরাসরি শুভেন্দুর অনুগামী বলেই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিজ্ঞমহলের মতে, নন্দীগ্রামের বিধায়কের অনুগামীরা বাংলার রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত করেছেন।

Advertisment

দলের নানা শীর্ষ পদে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি রাজ্যের সেচ ও পরিবহণমন্ত্রী। লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে পোস্টার, ব্যানারে "আমরা দাদার অনুগামী" লিখে কর্মসূচি চলছে বেশ কয়েকটি জেলায়। বিশেষত দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। দলের অভ্যন্তরে যা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, রাজ্যের অন্যত্র শুভেন্দুর সমর্থনে বিশালাকার হোর্ডিং পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু জায়গায় পরিবহণমন্ত্রীর ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। কিন্তু যে ভাবে শুভেন্দু অনুগামীরা প্রকাশ্যে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে তাতে একাংশ রাজনীতিবিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

publive-image পশ্চিম মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা।

কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেছিলেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। বামফ্রণ্টের মতো ৩৪ বছরের জবরদস্ত সরকারকে উপড়ে ফেলে দিয়েছিলেন মমতা। বাংলার রাজনীতিতে অনুগামীদের নিয়ে নতুন দল গঠন করে এমন সাফল্য আর কারও নেই। কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতিতে অনুগামীদের বিচরণ দলের জ্ন্মলগ্ন থেকেই ছিল। স্বাধীনতার পর এরাজ্যও তার ব্যতিক্রম ছিল না। অভিজ্ঞ মহলের মতে, পরবর্তীতে গনিখান চৌধুরী, প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ ভট্টাচার্য, সুব্রত-প্রিয় প্রত্যেকের দলের অন্দরে পৃথক লবি ছিল। প্রণব মুখোপাধ্যায় অনুগামীদের নিয়ে পৃথক রাজনৈতিক দল গঠন করে নির্বাচনে লড়াই করে ল্যাজেগোবরে হয়েছেন। এখনও দক্ষিণপন্থী দলে কর্মীরা বলে থাকেন আমি ওমুক দাদার লোক। কিন্তু শুভেন্দু অনুগামীরা একেবারে ভিন্ন রূপ দিয়েছেন।

Advertisment

দাদার অনুগামী, শুভেন্দুর অনুগামী, অনুগামী, সোশাল মিডিয়ায় এমন গ্রুপ বা ব্যক্তিগত প্রোফাইলের ছড়াছড়ি। এরা প্রায় সবাই শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য পোস্ট, শেয়ার করেন। এককথায় দাদার সমর্থনে সোশাল মিডিয়ায় রীতিমতোন ঝড় তুলে দিচ্ছেন এই অনুগামীরা। কোন মিডিয়ার কী খবর প্রকাশ পেল তাও নজরে থাকে এঁদের। খবর ঠিক মনে না হলে তার প্রতিবাদও করেন। জানা গিয়েছে, এছাড়া অনুগামীদের বিভিন্ন হোয়াটস-অ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সেখানেও দাদাকে নিয়ে যাবতীয় আলোচনা চলতে থাকে। বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, কংগ্রেস প্রত্যেকেই সোশাল মিডিয়াকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে এই অনুগামীরা অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠিত দলগুলির আইটি সেলকেও টেক্কা দিচ্ছে।

আরও পড়ুন- ‘দরজা বড় করে খুলে রেখেছি…’, দিলীপের মন্তব্যে শুভেন্দুর বিজেপি-যোগ জল্পনা তুঙ্গে

একদিকে যখন সোশাল মিডিয়ায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি পথে-ঘাটে-ময়দানে নেমেও অনুগামীরা শুভেন্দুর পোস্টার গায়ে সাঁটিয়ে কর্মসূচি করে চলেছে। জানা গিয়েছে, এই অনুগামীরা বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে কোনও কর্মসূচি রূপায়ন করছেন না। লকডাউনে খাবার, মাস্ক, নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী বিনামূল্যে প্রদান করেছেন অনুগামীরা। শুভেন্দু অধিকারীও বিগত কয়েক মাস অরাজনৈতিক কর্মসূচিতেই বেশি মন দিয়েছেন। সেই পথেই চলছে তাঁর অনুগামীরাও। এটাই স্বাভাবিক। তবে সমালোচকদের ছোটলোক বললেও দলের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারন করেননি নন্দীগ্রামের নায়ক। বাংলার রাজনীতিতে শুভেন্দুর মতোই এই অনুগামীরাও এখন সকলের নজরে। সামনেই ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে অনুগামীর দল কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠছে তা আগামিদিনেই প্রকাশ পাবে। চাপের রাজনীতিতে কে এগিয়ে যায় রাজনীতিবিদদের নজর রয়েছে সেদিকে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Suvendu Adhikari