সমালোচকদের একহাত নিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সমালোচকদের 'ছোটোলোক' বলতেও দ্বিধা করেননি। নন্দীগ্রামের সভায় তিনি স্পষ্ট জানালেন, 'যতক্ষণ না আমার মুখ থেকে কিছু শুনছেন বাজারি সংবাদপত্র এবং পোর্টালের লেখা উপেক্ষা করে চলুন। আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'কোভিড যখন আমার হয়েছিল তখন বহু মানুষ ফোন বা মেসেজ করেছিলেন কিন্তু এমন অনেকেই ফোন করেননি যাঁদের নাম বললে তাঁরা বিপদে পড়বেন।'
বিগত কয়েকমাস ধরেই বিভিন্ন অরাজনৈতিক মঞ্চে হাজির থাকছেন নন্দীগ্রামের নায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানার ছাড়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়া তার এই কর্মসূচি নিয়ে দলের কেউ কেউ কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না। তবে এ বিষয়টাকে তিনি যে একেবারেই পাত্তা দেন না ফের এদিনের সভায় তিনি জানিয়ে দেন। শুভেন্দু বলেন, "আমি লিফটে উঠিনি, প্যারাসুট নামেনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি। আমাকে এসব করে কোন লাভ হবে না। ছোটলোকদের দিয়ে বাজে কথা বলিয়ে ভাবছে আমি উত্তর দেব। আমার লেভেলটা ওই নাকি!" নাম না করেই এভাবেই সমালোচকদের প্রতি তীব্র বিষোদ্গার করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, "কুকুরে মানুষকে কামড়ায় তাহলে মানুষ কী কখনো কুকুরকে কামড়াবে?"
আরও পড়ুন- পরিবহণমন্ত্রীর কর্মসূচি নিয়ে বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক, পাত্তা দিতে নারাজ শুভেন্দু
শনিবার নন্দীগ্রামের বিজয়া সম্মেলনের সভায় স্মৃতিচারনায় মগ্ন হয়ে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি কিভাবে ধাপে ধাপে আন্দোলন করেছেন। ছাত্রনেতা থাকার সময় কাদের কাছ থেকে তিনি পরামর্শ নিতেন। তিনি জানিয়ে দেন, ১০ নভেম্বর রক্তাক্ত সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি। সেদিন গোকুলনগরে তিনি জনসভা করবেন। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি এর বাম জমানায় বিনয় কেঙার বলেছিলেন চারিদিক ঘিরে লাইফ হেল করে দেব। লক্ষন শেঠ বলেছিলেন নয়াচরে ঢুকলে ঠ্যাং কেটে হাতে ধরিয়ে দেব। আমি কিন্তু পরের দিনই নয়াচরে ঢুকেছিলাম। শুভেন্দু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর কোনও পিছুটান নেই। বিয়ে করেননি। তাঁর নিজস্ব কোন দায়বদ্ধতা নেই। কোন পিছুটান নেই। বৃহত্তর পরিবার নিয়েই থাকতে চান।
এর আগে শুভেন্দু বলেছিলেন অতীত যারা ভুলে যায় তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এদিন তিনি বললেন, আশ্চর্য হয়ে যায় কেউ কেউ অতীত ভুলে যায়। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, "সেই সময় 3 লক্ষের উপর মানুষ তাকে এসএমএস করেছেন। তাঁকে বহু মানুষ ফোন করেছেন। কিন্তু দু'একজন ফোন করেননি। তবে তাঁদের নাম বলবো না। নাম বললে বিপদ হয়ে যাবে।"
সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারী দল বদল করতে পারেন বা নিজের দল ঘোষণা করতে পারেন এমন রটনা চলছে। এদিন শুভেন্দু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "যতক্ষণ না আমার মুখ থেকে কিছু শুনছেন এই বাজারী সংবাদপত্র বা ঘরে এসিতে বসে পোর্টাল চালাচ্ছেন, এগুলো উপেক্ষা করুন। নিজের লড়াই নিজে করুন। আপনাদের সঙ্গে আমি ছিলাম, আছি এবং থাকব।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন