রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজি যশবন্ত সিনহা। ''বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দল থেকে সরে এসে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের জন্য কাজ করতে হবে।'' মুখে সরাসরি রাষ্ট্রপতি পদের ভোটে লড়ার কথা না বললেও টুইটে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের। এক কথায় দিন কয়েক আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব লুফে নিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।
এদিন টুইটে যশবন্ত সিনহা লিখেছেন, ''তৃণমূলে মমতাজি আমাকে যে সম্মান ও প্রতিপত্তি দিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এখন একটা সময় এসেছে যখন বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে আমাকে দল থেকে সরে এসে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের জন্য কাজ করতে হবে। আমি নিশ্চিত তিনিও আমার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবেন।'' যশবন্ত সিনহা ২০১৮ সালে বিজেপি ছেড়েছিলেন। গত বছরেই তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি করেন।
আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যমত্যভাবে প্রার্থী দিতে চায় বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই গেরুয়া বিরোধী প্রায় সব দলই এই ইস্যুতে এক ছাতার তলায় এসেছে। একাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিলেন মারাঠা রাজনীতির চাণক্য তথা এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার। তবে তিনি নিজেই এই দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান। দিল্লির কনস্টিটিউশন হলের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লার নাম প্রস্তাব করা হয়। সব দলউই এতে সম্মত হয়। যদিও পরে ফারুক নিজেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান না বলে জানিয়ে দেন।
আরও পড়ুন- আনিস খান মৃত্যু মামলা, নজিরবিহীন পদক্ষেপ হাইকোর্টের
এরপর পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা গান্ধী পরিবারের সদস্য গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম চর্চায় উঠে আসে। মমতা ববন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে আবেদন করেন। তবে পওয়ার, ফারুকদের পথেই শেষমেশ হেঁটেছেন গোপালকৃষ্ণ গান্ধিও। রাষ্ট্রপতি পদে দাঁড়াতে চান না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল। এই নিয়ে বিরোধীদের তিন জন পছন্দের প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন- শরদ-ফারুকের পথেই হাঁটলেন গোপালকৃষ্ণ, মমতার তিন নম্বর বাছাইও না করে দিলেন
শেষমেশ বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়। যদিও তৃণমূলের তরফে যশবন্তের নাম উঠতেই কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি আরও একটি প্রস্তাব দেয়। গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তুলতে বাজপেয়ী জমানার মন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্তকে দলীয় পদ ছাড়ার প্রস্তাব দেয় বাম, কংগ্রেস-সহ বিরোধী বেশ কয়েকটি দল। শেষমেশ সেই প্রস্তাবই মেনে নিয়েছেন যশবন্ত। এখনও সরাসরি না বললেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হতে যে কোনও আপত্তি নেই টুইটে এদিন সেই বিষয়টিই কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ।