বাংলার রাজনীতিতে এবার উত্তাপ ছড়াচ্ছে 'ডায়মন্ডহারবার মডেল'। প্রথমে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে সমর্থন, এরপর মডেলের বিরোধিতা করে তৃণমূল সাংসদের সরাসরি সাধারণ সম্পাদককে আক্রমণ। এবার আবার তৃণমূলের যুব ব্রিগেড সোশাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে অভিষেকের 'ডায়মন্ডহারবার মডেল' নিয়ে। সঙ্গে 'অ-কল্যান-এর পরাজয়ের ডাক দিয়েছে। এদিকে এখনও সেই মডেল রাজ্যের অন্যত্র বাস্তবায়িত হয়নি। মুখে সমর্থন করলেও এখনও ওই মডেল কেউ ফলো তো করেইনি, রাজ্য সরকারের মনোভাবেও তা প্রকাশ পায়নি।
একাধিক যুব তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ডায়মন্ডহারবার মডেল'-এর সমর্থনে সোশাল মিডিয়ায় সুর চড়িয়েছেন। মডেল বিরোধীদেরও রেয়াত করছেন না এই যুব নেতৃত্ব। শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায় অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে 'ডায়মন্ডহারবার মডেল' দেশের মধ্যে বড় উদাহরণ বলে টুইটারে মন্তব্য করেছেন। আগামী দু'মাস রাজনীতি ও ধর্মীয় সভা-সমাবেশ বন্ধ করার অভিষেকের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন দলের এই বিধায়ক। একে একে তৃণমূলের যুব সংগঠনের একাধিক নেতৃত্ব সরব হয়েছেন 'ডায়মন্ডহারবার মডেল' নিয়ে।
যুব তৃণমূলের পরিচিত মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্য শুধু সমর্থনই করেননি, রাজ্য প্রশাসনে অভিষেক নেই বলে আফশোষ করেছেন তিনি। তৃণমূল যুবর রাজ্য সহ সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় #I_Support_Diamond_Harbour_Model' ফেসবুক পোস্ট করে শেষে লিখেছেন #তফাৎ ছিল তফাৎ আছে তফাৎ থাকবে।' তৃণমূল কংগ্রেসের অপর মুখপাত্র তথা যুবনেতা সুদীপ রাহাও সোশাল মিডিয়ায় গলা ফাটিয়েছেন অভিষেকের ডায়মন্ডহারবার মডলে নিয়ে। অভিষেকের মন্তব্য সর্বজনগ্রাহ্য বলে তাঁর মত।
দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অভিষকের বক্তব্য ব্যক্তিগত হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হবে বলে তিনি অনেক মন্তব্য করেন না বলেও জানিয়েছেন। এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করা হচ্ছে বলে তৃণমূলের এই সাংসদ মনে করেন। এদিকে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ রাহা ও কুন্তল ঘোষ সোশাল মিডিয়ায় তাঁদের বক্তব্যে 'অ-কল্যান' শব্দটির ওপর জোর দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- প্রতিদিন শিখরে পৌঁছচ্ছে সংক্রমণ, পুরভোট পিছনো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিক কমিশন, নির্দেশ হাইকোর্টের
কুন্তল লিখেছেন, 'অ-কল্যানের বিসর্জন হবে তার সঙ্গে জয় হবে ভারতের যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।' শান্তনু পোস্ট করেছেন-'মানুষ এর আশীর্বাদ সাথে থাকলে কোনও অ-কল্যান কামি শক্তি কিছু করতে পারে না।' সোশাল মিডিয়ায় সুদীপ লিখেছেন, 'স্বার্থান্বেষী ঈর্ষাকাতর যারা, তারা রাজনীতির অ-কল্যান।'
কোভিড মোকাবিলায় ডায়মন্ডহারবারে যে 'ব্যক্তিগত' মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তা দলের মত বলে সমর্থন করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সৌগত রায়। প্রকাশ্যে সাধারণ সম্পাদকের মতকে সমর্থন করলেও কোভিড মোকাবিলায় কেউই অভিষেকের দেখানো পথে হাঁটেননি। এই পরিস্থিতিতে অভিষেকের 'ডায়মন্ডহারবার মডেল' নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় ঝড় তুলতে চাইছে তৃণমূলের যুব শক্তি'।