জাতীয় রাজনীতিতে অগ্নিপরীক্ষার দোরগোড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার পড়শি রাজ্য ত্রিপুরায় পুরসভা নির্বাচন। ওই রাজ্যের পুর নির্বাচনকে সঙ্গী করেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে এবার পদার্পণ করতে চলেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে ঘাসফুল শিবির। একেবারে নয়া মোড়কে দলকে সামনে থেকে লড়াইয়ের ময়দানে রেখেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
ইতিমধ্যে ভিন রাজ্য থেকে দুজন তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় গিয়েছেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্য বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। সন্তোষমোহন কন্যা সুস্মিতা দেব ত্রিপুরায় মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ হয়েই ওই রাজ্যে সংগঠন বিস্তারে মযদানে নেমে পড়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় রাজনীতিতে অভিযান অব্যাহত। এখন দিল্লিতে রয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা স্তরের নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাত করছেন তিনি। এমনকী বুধবার বর্ষীয়াণ বিজেপি নেতা সুভ্রাহ্মনিয়াম স্বামীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মমতা। এদিকে ত্রিপুরার পুরভোটকে পাখির চোখ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরা বিজেপিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তৃণমূলের যুবরাজ।
ত্রিপুরার বাইরে গোয়া, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানায় সংগঠন মজবুত করতে কসরৎ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের লক্ষ্য ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। কংগ্রেসকে লাগাতার সমালোচনা করে চলেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, কংগ্রেস নয় তণমূলই হারাতে পারে বিজেপিকে। ইতিমধ্যে ভিন রাজ্যের কংগ্রেসের একাধিক নেতা-নেত্রী ঘাসফুল শিবিরে ভিড়েছেন। এবিষয়ে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলকে নিয়ে নানা জল্পনাও রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাজ্যে রাজ্যে সংগঠন তৈরির জন্য আমন্ত্রণ আসছে। প্রতিটি রাজ্যেই তৃণমূল সংগঠন বিস্তার করতে উদ্যোগী হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরার পুরভোট তৃণমূলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিন রাজ্যে ঘাসফুলের সংগঠন বিস্তারের গতি কিছুটা হলেও নির্ধারিত হতে পারে। যে ভাবে ত্রিপুরায় তৃণমূল ঝাঁপিয়ে পড়েছে সেক্ষেত্রে নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়লে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে তৃণমূল নেতৃত্বকে।
সাধারণত স্থানীয় প্রশাসকের নির্বাচনের লড়াইতে ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তৃণমূল কংগ্রেস চ্যালেঞ্জ হিসাবে পুরভোটকেই বেছে নিয়েছে। এর আগে ত্রিপুরা সহ নানা রাজ্যে সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তৃণমূল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভোটপ্রাপ্তির হার ছিল অত্যন্ত কম। বিধানসভা বা লোকসভা নয়, এবার পুরভোটকেই ভিত্তি করে রাজনৈতিক লড়াই শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মোদ্দা কথা ত্রিপুরার পুরভোট তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে অ্যাসিড টেস্ট বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন