জঙ্গলমহলের ভাঙা ঘর মেরামত না করলে লোকসভা নির্বাচনে যে যথেষ্ট ভুগতে হবে সে কথা মালুম হয়েছে শাসকদলের। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির বর্ধিত সভায় তা স্পষ্ট বোঝা গেল। ২০১১ সালে রাজ্য়ে ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহল রাজনৈতিক ভাবে বড়সড় চ্য়ালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে শীর্ষ নেতৃত্ব কতটা সিরিয়াস তা বোঝা গেল যখন তৃণমূল সুপ্রিমো জানালেন, “আপাতত ঝাড়গ্রাম দেখছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। এরপর আমি নিজেই দেখব।’’
পঞ্চায়েত ভোটে পদ্ম কাঁটা যে তৃণমূল কংগ্রেসের ওপরমহলের ঘুম ছুটিয়েছে তা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ভাষণে এদিন একাধিকবার উঠে এসেছে। জঙ্গলমহল, নদিয়া, আলিপুরদুয়ারসহ যেখানেই বিজেপির ভাল ফল হয়েছে সেখানেই বিশেষ নজর দিতে বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। পঞ্চায়েতের ফল নিয়ে ক্ষুব্ধ দলনেত্রী বলেন, “কয়েকটি ব্লকে দলের নির্দেশ মানা হয়নি। গায়ে হাওয়া লাগিয়ে দল করতে হবে না। কিছু নেতা কিছুই করেনি। দুতিনজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সময়মত ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রীদেরও রেওয়াত করা হবে না।’’
তৃণমূল সুপ্রিমো জানালেন, “আপাতত ঝাড়গ্রাম দেখছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। এরপর আমি নিজেই দেখব।’’ (এক্সপ্রেস ফোটো- শুভম দত্ত)
পঞ্চায়েতের ফল নিয়ে ক্ষুব্ধ মমতার ক্ষোভের আঁচ এদিন গায়ে লাগল রাজ্য়ের মন্ত্রীদের। এদিন তাঁর তোপের মুখে পড়েন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও শ্রীকান্ত মাহাতো। রবীন্দ্রনাথকে মাথা ঠান্ডা করতে বলে উজ্জ্বল ও শ্রীকান্তকে সর্বসমক্ষে তিরস্কার করেন তৃণমূল নেত্রী।
আরও পড়ুন, নিজশ্রী প্রকল্পে সস্তায় ফ্ল্যাট দেবে রাজ্য
পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঁচজনের কোর কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করে, কেশিয়ারির কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গড়ার নির্দেশ দেন মমতা।
এদিকে জঙ্গলমহল নিয়ে সংশয় বাড়ছে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে পথ দুর্ঘটনায় ১১ জনের ম়ৃত্য়ু হয়েছে। কেন এই দুর্ঘটনা, তারও পিছনে কী আছে তা নিয়েও তদন্ত করছে সরকার। জঙ্গলমহলে যে যে ব্লকে দলের খারাপ ফল বিশ্লেষণ করে দ্রুত ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। দলের আদিবাসী সমাজকে আরও গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূনেত্রী। তিনি বলেন, “আদিবাসী পেনশন কার্ড অন্য় জনের কাছে থাকবে, এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এর পর যার কাছে আদিবাসী পেনশন কার্ড পাওয়া যাবে, তাকেই গ্রেফতার করা হবে।’’ মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের জনসংযোগ বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়ে মমতার অভিযোগ, আদিবাসী এলাকায় গিয়েও বিভেদের রাজনীতি করছে বিজেপি।