২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডের সভা সফল করতে ১৬ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কোর কমিটির বর্দ্ধিত সভা করছে তৃণমূল। কিন্তু শারদ উৎসব চলাকালীন রাজ্যে একের পর এক ঝামেলায় নেতা-কর্মীদের নাম জড়ানোয় কিঞ্চিৎ বিপাকে পড়েছে দল। ইতিমধ্যে দুর্গাপুজোর মন্ডপে হামলা চালানোয় উত্তরপাড়া-কোতরাং পুরসভার এক দলীয় কাউন্সিলরকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল।
দলের একাংশ মনে করছে, উৎসবের মাসে যেভাবে গন্ডগোলে জড়াচ্ছেন দলের কর্মীরা, তাতে জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটছে। এসব বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ না নিলে তার প্রভাব পড়বে লোকসভা নির্বাচনে। কারণ পরিস্থিতির সুবিধে নিতে উৎসুক বিজেপি। সূত্রের খবর, কোনও কর্মী ঝামেলায় জড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল। কাউন্সিলরকে সাসপেন্ড করেও সেই বার্তাই দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তর ২৪ পরগণার নানা ঘটনায় দল বাধ্যত কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলে দলের ওই অংশ মনে করছে।
টিটাগড়ে তৃণমূল নেতা সতীশ মিশ্রকে গুলি করে খুনের অভিযোগে সম্প্রতি চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। সোমবার দিনের বেলায় কালীপুজোর মন্ডপের সামনে এই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে রাজনৈতিক মহল। যদিও এই ঘটনায় বিজেপির স্থানীয় কার্যালয় ভাঙচুর হয়েছে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই খুন। উত্তর ২৪ পরগণায় দলের অন্তর্কলহ কোন পর্যায়ে গিয়েছে তা কাঁচড়াপাড়ার দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় বোমাবাজির ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: খুনের ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি, বিস্ফোরক ত্রিপুরার কংগ্রেস সভাপতি
দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বোমার স্প্লিন্টারে এক স্কুল ছাত্রী জখম হয়েছে। ওই ঝামেলাকে কেন্দ্র করে রাজা সরকার ও সুদীপ্ত দাস নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা দুজনই শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই অভিযোগ। দমদমে এক প্রোমোটারও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কিছুদিন আগে।
উল্লেখযোগ্য, টিটাগড়ের তৃণমূল নেতা খুন নিয়ে কোনও মন্তব্য করেন নি দলের মহাসচবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, দলের সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ এবং পুরসভার প্রতিনিধি, তৃণমূলের জেলা, ব্লক ও অঞ্চল সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহসভাপতি সহ তৃণমূল যুব, কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ ও মহিলা তৃণমূলের প্রতিনিধিরা ১৬ নভেম্বরের সভায় হাজির থাকবেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডের সভা সফল করতে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়েও কড়া বার্তা দেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে দলের যুব ও মূল সংগঠনের সংঘর্ষ নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। তার পরেও দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি সহ নানা জায়গায় সংঘর্ষ বন্ধ করতে পারেননি দলীয় নেতৃত্ব। উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগণার শিল্পাঞ্চলও। দলের অভ্যন্তরে সমালোচনার ঝড় ওঠার আগেই যে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন, সে সম্বন্ধে অত্যন্ত সচেতন দলীয় নেতারা।