/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/mamata-1.jpg)
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় হ্যাটট্রিক করার পর তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য ছিল অন্য় রাজ্য়ে বিস্তার করা। সেই উদ্দেশ্যে এর আগে পরশি রাজ্য ত্রিপুরায় পুরসভা ভোটে লড়াই করে একটি আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশ করার পর দেখা যায় গোয়ায় কোনও আসনেই জয় পায়নি তৃণমূল। শূন্য হাতেই থাকতে হয়েছে। ঘাসফুলের জোটসঙ্গী মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি দুই কেন্দ্রে জয় পেয়েছে। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে গোয়ার ওই দল তিন আসনেই জয় পেয়েছিল। জয়ের পর গোমন্তক পার্টি কোন দলকে সমর্থন করে সেটাও দেখার।
এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, অন্য রাজ্যে দল শুধু লড়াই করতে যাবে না। দ্বিতীয় হতেও যাবে না। চ্যালেঞ্জ ছিল ক্ষমতা দখলের। এদিন গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস কোনও আসনে জয় তো দূরের কথা সেভাবে এগিয়েও থাকেনি। ৪০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ২৬টি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল। আরবসাগরের তিরে দায়িত্ব নিয়ে পড়েছিলেন সাংসদ মহুয়া মিত্রসহ একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটের নিট ফল শূন্য।
গোয়া বিধানসভার ফলাফল অনুযায়ী এবার সেখানে ২টি আসন পেয়েছে আপও। দিল্লির এই রাজনৈতিক দল এবার ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পঞ্জাবে শাসন করতে চলেছে। এখন আম আদমি পার্টি দেশের অন্যত্র বিস্তার করতে চাইছে। বাংলায় সংগঠন সাজাতে শুরু করেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের মর্যাদা পেয়েও শূন্য হাতেই থাকতে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে। দু'বছর পর ২০২৪-এ লোকসভার নির্বাচন। তার আগে একটি আসনে জয় পেলেও দলের মনোবল বাড়ত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে বিস্তারের ক্ষেত্রে একটি আসনে জয়ও দরকার ছিল। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী না থাকা সত্বেও উত্তরপ্রদেশে দুদফায় প্রচারে গিয়েছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অখিলেশ যাদবের সমর্থনে তিনি সভা করেছেন। কিন্তু গোয়ায় দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে যাননি। রাজনৈতিক মহলের মনে করছে, তখনই উপলব্ধি করা গিয়েছিল গোয়ায় তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা খুব একটা নেই। সেক্ষেত্রে দলনেত্রীও দুদিন আগেই বলেছিলেন, তিন মাসে আর যাই হোক গোয়ার ঘরে ঘরে তৃণমূলের প্রতীকের পরিচিতি তো ঘটানো গিয়েছে।
জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কংগ্রেসের জায়গা কে নিতে পারবে তা নিয়েই মূলত লড়াই শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, এটাই ভাল সময় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস মিশে যাওয়ার। এদিকে আপ নেতৃত্বের বক্তব্য, পঞ্জাব প্রমান করেছে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে একমাত্র তারাই। এদিকে একাধিক বিরোধী দলের প্রার্থী ছিল গোয়া বিধানসভায়। কার্যত তাতে লাভবান হয়েছে বিজেপি। জাতীয় দলের তকমা পেতে এবার মরিয়া হয়ে উঠেছে আপ। মোদ্দা কথা, গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দেওয়া ও কোনও আসন না পাওয়ায় অন্য রাজ্যে দলের বিস্তার বাধা পেল কীনা সেটাও দেখার। আপ অন্য় রাজ্য দখল করে, গোয়ায় আসন পেয়ে জাতীয় রাজনীতিতে আরও পদক্ষেপ করতে এই ফল তাদের সাহায্য় করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।