দিল্লির মসনদ থেকে মোদিকে হঠাতে সামগ্রিক ভাবে জাতীয় স্তরে জোট গড়ার ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ডাকে সারা দিয়ে ইতিমধ্যে দিল্লিতে বৈঠকে মিলিত হয়েছে বিজেপি বিরোধী নেতৃত্ব। সনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে দোস্তি, রাজ্যে কুস্তি, এখন একথাটাও অপ্রাসঙ্গিক। এরাজ্যে কংগ্রেসের শক্তি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। একদিকে কংগ্রেসের ঘর ভাঙছে, পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে ঘাসফুল শিবিরের আধিপত্য বাড়ছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের লক্ষ্য বাংলা ছাড়িয়ে অন্য রাজ্যে ক্ষমতা বিস্তার করা। একেবারে জয়ের লক্ষ্যেই লড়বে ঘাসফুল শিবির। এই টার্গেট নিয়েই কাজ শুরু করে তৃণমূল। ইতিমধ্যে পড়শি রাজ্য ত্রিপুরায় সর্ব শক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল। ওই রাজ্যে বিজেপি, সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস থেকেও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান চলছে। শুধু ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন নয়, জাতীয় স্তরে দলকে শক্তিশালী করতে তৎপর তৃণমূল।
আরও পড়ুন- পেগাসাস কাণ্ডের তদন্তে মমতা সরকারের কমিশন, রাজ্যকে সুপ্রিম নোটিস
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসে কিছু দিন আগেই যোগ দিয়েছেন। অভিজিৎ দুবারের সাংসদ হলেও এরাজ্যে তাঁর ফ্যান-ফলোয়ার আছে বলে তিনিও দাবি করবেন না বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু দুবারের সাংসদ হওয়ায় ও প্রণববাবুর পুত্র পরিচয়ে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর যোগাযোগ থাকাই স্বাভাবিক। জাতীয় রাজনীতিতে ঘাসফুল শিবির প্রভাব বিস্তার করতে মরিয়া।
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মহিলা শাখার সভানেত্রী প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সন্তোষমোহন দেবের মেয়ে। পাশের রাজ্য অসমেও সংগঠন বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূল। অভিজ্ঞ মহলের মতে, প্রাক্তন এই সাংসদের তৃণমূল যোগের ফলে তাঁর সর্বভারতীয় পরিচিতিকে কাজে লাগবে ঘাসফুল শিবিরের। পিতৃ পরিচয়ের সূত্রে সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও সুস্মিতা দেবদের অনেকের সঙ্গেই ভাল যোগাযোগ আছে।
কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল তৈরি হলেও সনিয়া শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়েই বাংলা থেকে বামেদের উৎখাত করতে সফল হয়েছিল ঘাসফুল শিবির। তবে তারপর থেকে আর রাজ্যস্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও বনিবনা নেই তৃণমূলের। এরাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠন কার্যত তৃণমূলে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এবার জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক চালিয়ে গেলেও সেই দলের নেতা-নেত্রীরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। জাতীয় স্তরেও তৃণমূলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ভরসা সেই প্রাক্তন কংগ্রেস নেতৃত্বই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন