রামপুরহাটের বগটুই-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে সবরকম সহযোগিতার বার্তা দিয়েও কৌশলী অবস্থান তৃণমূলের। এদিন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ''সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করবে তৃণমূল। তবে প্রতিহিংসার রাজনীতির চেষ্টা হলে গণআন্দোলন হবে।''
আর রাজ্য পুলিশের সিট নয়। রামপুরহাটের বগটুই গণহত্যার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হইকোর্ট। সিটের থেকে নিয়ে বগটুই গণহত্যার তদন্তভার এবার দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, ''সিট আর এই মামলার তদন্ত করবে না। ন্যায়বিচারের স্বার্থে সিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। বগটুইয়ের ঘটনায় সব ধৃতকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। সত্য উদঘাটনের প্রয়োজন রয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।''
আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি থেকে শুরু করে বাম ও কংগ্রেস। তবে আদালতের নির্দেশের বিরোধিতা না করলেও এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, ''বিজেপির দুই ভাই সিবিআই আর ইডি। শুধু বাংলার বেলাতেই কেন সিবিআই তদন্ত? হাথরস, উন্নাও, লখিমপুরে হয় না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়েছেন। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে তদন্ত করাচ্ছেন। ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। সিবিআই তো নিরপেক্ষ সংস্থা নয়।''
আরও পড়ুন- রামপুরহাট-কাণ্ড: CBI নির্দেশ স্বাগত BJP-র, কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চায় বাম-কংগ্রেস
এরই পাশাপাশি এদিন কুণাল ঘোষ এদিন আরও বলেন, ''সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করবে তৃণমূল। তবে তদন্তের নামে সিবিআই যদি নিজিদের পরিধি ডিঙিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করে বা বিজেপিকে আড়াল করার চেষ্টা হয় তবে প্রতিবাদ হবে। গণ আন্দোলন হবে।''
এদিকে, বগটুইয়ে সিবিআই নির্দেশে কুণাল এদিন তৃণমূলের অবস্থান প্রসঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর আগেও সারদা, নারদ-তদন্তের ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশে পদক্ষেপ করেছিল সিবিআই। দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূল বিধায়করা। সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূল। কলকাতায় নিজাম প্যালেসের বাইরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন- পুলিশ হেফাজতে আনারুল, আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি তৃণমূল নেতার
সিবিআই অফিস লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে দেখা গিয়েছিল উন্মত্ত জনতাকে। এমনকী নারদ মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী, নেতারা গ্রেফতার হওয়ায় চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চরিতার্থ করার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এমনকী নারদ-কাণ্ডে দলের নেতারা গ্রেফতার হওয়ার প্রতিবাদে নিজাম প্যালেসে গিয়ে একটানা ধর্নায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।