আগামিকালই তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের ১১ বছর পূর্তি। ঠিক তার আগের দিনই কার্যত বোমা ফাটালেন জোড়াফুলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। সরাসরি না বলেও দলে 'বেনোজল' ঢোকার ইঙ্গিত যুবনেতা দেবাংশুর। যদিও দল সতর্ক রয়েছে বা দলে 'স্ট্রং ফিল্টার রয়েছে' জনিত শব্দবন্ধ লিখে কিছুটা 'সেফ' থাকারও চেষ্টা করেছেন দেবাংশু। তবে রবিবাসরীয় দুপুরে তৃণমূলের যুব নেতার এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। বিতর্ক বাড়তেই পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছেন যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্য।
একুশের ভোটের আগে জোড়াফুল ছেড়ে পদ্ম-যোগের কার্যত হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। একাধিক নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তবে হিসেবের উলোট-পুরাণ হয় গত বছরের ২ মে-র পর থেকে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা ফের জোড়াফুল শিবিরে ফিরতে শুরু করেন। সেই প্রবণতা এখনও জারি রয়েছে। এদিকে, একুশের ভোটের আগে বিজেপিতে যাওয়া তৃণমূল নেতাদের একাংশকে বিঁধে সেই সময়েই যুব তৃণমূল নেতা দেবাংশু সদর্পে ঘোষণা করেছিলেন, ''গদ্দারেরা ফিরলে আমি তৃণমূল ভবনের সামনে শুয়ে থাকব।'' যদিও বাস্তবে তা হয়নি। তবে দেবাংশু বহু আগেই তাঁর সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
আগামিকাল অর্থাৎ ২ মে, চলতি তৃণমূল সরকারের এক বছর পূর্তি। ঠিক তার আগের দিন ফের ফেসবুক পোস্ট দেবাংশু ভট্টাচার্যের। তিনি লেখেন, ''গত বছর ঠিক আজকের দিন পর্যন্ত রাজ্যে যে তৃণমূলটা ছিল, সেটাই নিষ্কলুষ। ধান্দাবাজহীন, অকৃত্রিম, প্রকৃত তৃণমূল। তারপর তো বন্যা এল! গঙ্গার জল, ড্রেনের জল সব মিলেমিশে একাকার! তবুও দলে একটা স্ট্রং ফিল্টার আছে বলেই বিশ্বাস। তারা পিছনের সারিতেই থাকবেন, সেটাও বিশ্বাস করে দলের কর্মীরা।''
আরও পড়ুন- অর্জুনের মানভঞ্জন, পাট নিয়ে বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ‘ইতিবাচক’, টুইট সাংসদের
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন একটা সময় তৃণমূলের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া আরও বেশ কয়েকজন নাকি ফের একবার জোড়ফুলে ফিরতে অঙ্ক কষছেন। এখনও স্পষ্ট না হলেও বর্তমানে সেই তালিকায় সবার উপরে নাম রয়েছে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। যদিও বিজেপি সাংসদ নিজে এব্যাপারে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানাননি।
তবে কি ইঙ্গিত পেয়েই পরোক্ষে দলকে বার্তা দিয়ে রাখলেন দেবাংশু। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হতেই আগের পোস্ট ডিলিট। নতুন একটি পোস্টে দেবাংশু লিখলেন, ''শেষ পোষ্টের অর্থ হয়ত ঠিকঠাক বোঝাতে পারিনি। অকারণ বিতর্ক হচ্ছে। তাই পোস্ট ডিলিট করলাম।কর্মীরাই দলের সম্পদ। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দলের সিদ্ধান্তের উপর ভরসা রাখতে হবে। এই দলে কর্মীদের স্বার্থ সবার আগে দেখা হয়। কারণ, এই দলের নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।''
এদিকে, দেবাংশু ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এদিন বলেন,''দলত্যাগী নেতারা আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে ছড়ি ঘোরানোর কাজ করছেন। হতাশা গ্রাস করছে পুরনো নেতাদের। ওর উচিত যোগ ব্যায়াম করা।"