Advertisment

পদ্ম কাননে শোভন-বৈশাখী

বুধবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিজেপিতে যোগ দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sovan baisakhi , শোভন, বৈশাখী

শোভন-বৈশাখী। ছবি: টুইটার।

দূরত্ব বাড়তে বাড়তে শেষ পর্যন্ত সম্পর্কের সুতোটা ছিঁড়েই গেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। এদিন বিজেপিতে যোগ দিলেন শোভনের 'বান্ধবী' তথা অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বুধবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেন মমতার ‘প্রিয় কানন’। দীর্ঘদিন ধরেই শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনায় সরগরম ছিল বঙ্গ রাজনীতি। অবশেষে সেই জল্পনাই সত্যি হল। এর ফলে মুকুল রায়ের পর আজই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে বড় জার্সি বদলটি ঘটল বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল। উনিশের নির্বাচনের ধাক্কা খাওয়ার পর বুধবার প্রথম সারির এই হেভিওয়েট নেতার দলত্যাগ মমতা ব্রিগেডের কাছে রীতিমতো বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

Advertisment

আরও পড়ুন: শোভনের বিজেপিতে যোগদান দেখে হাসছেন রত্না! কেন?

আরও পড়ুন: উনি যেদিন আসবেন, সেদিনই বিজেপি ছাড়বেন শোভন: বৈশাখী

অন্যদিকে, সকলকে চমকে দিয়ে দিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরে উপস্থিত হন রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক তথা টলিউড নায়িকা দেবশ্রী রায়। তবে এদিন তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি। তবে, শোভন-বৈশাখীর বিজেপিতে যোগদানের সেখানে দেবশ্রী রায়ের উপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন: ডাহা ফেল মমতা-পিকে, মুকুলের হাতে ‘সমীক্ষার ফল’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর তারপরই কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লি উড়ে যান কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক। এই ঘটনাক্রম থেকেই শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা দ্বিগুণ হয়ে যায়। শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল। মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন মমতা অতি ঘনিষ্ঠ শোভন। তখন থেকেই শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনায় সরগরম হয় বঙ্গ রাজনীতি।

আরও পড়ুন: তৃণমূলে ফেরার প্রশ্নই নেই, ভাল লোকেরাই দল ছাড়ছে: বৈশাখী

সম্প্রতি, বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপিতে যোগদানের আভাস দিয়েছিলেন শোভন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বলেছিলেন, ‘‘ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে কোন পথে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’’। এর আগে সেই অর্থে বিজেপিতে যোগদানের ব্যাপারে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন শোভন। সেভাবে কখনই প্রকাশ্যে কোনও ইঙ্গিতও দেননি তিনি। তবে শোভনকে তৃণমূলে ফেরানোর চেষ্টা যে একেবারেই হয়নি, তা নয়। গত ২৩ জুলাই মধ্যরাতে শোভনের ফ্ল্যাটে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যে তৃণমূলে ফিরবেন না, সে কথা সেদিনই পার্থকে জানিয়ে দেন শোভন, এমনটাই জানা গিয়েছিল। এই বৈঠকের পরই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ‘‘তৃণমূলে ফেরার কোনও প্রশ্নই নেই’’। অতীতে বৈশাখী বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের কথা হয়েছে এবং তিনি গেরুয়া শিবিরকে অচ্ছুৎ মনে করেন না।

শোভনের বিজেপিতে যোগদানের ব্যাপারে একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায় সম্প্রতি বলেছিলেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় দলে (তৃণমূলে) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। শোভনের সঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কথা হয়েছে বলে জানি। তবে শোভন কী করবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার’’।

আরও পড়ুন: তৃণমূলেই আছি, দল প্রমাণ করল আমার দাবি ন্যায্য ছিল: সব্যসাচী

কয়েক মাস আগে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারিক বিবাদে জড়িয়ে পড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এই সময়েই মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। শোভন 'মন্ত্রীত্বে সময় দিতে পারছেন না' বলে তিরস্কারও করেন মমতা। এরপরই মন্ত্রীত্ব এবং মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপর থেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে কার্যত নিজেকে গুটিয়ে নেন শোভন। এরপরই জল্পনা ছড়ায় তবে কি তিনি তৃণমূল ত্যাগ করছেন? যত দিন গড়ায়, ততই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে শোভনের। গত ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের সভাতেও গরহাজির থেকেছেন তিনি। এছাড়া, মমতার ডাকে দলের বিধায়কদের বৈঠকও এড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পূর্ব এলাকায় তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও গরহাজির থাকেন শোভন। বুধবার স্পষ্ট হয়ে গেল যে এসবই ছিল সুপরিকল্পিত পদক্ষেপের ইঙ্গিত।

tmc bjp Mamata Banerjee
Advertisment