যত দিন গড়াচ্ছে, ততই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের দমকলমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে কিছুটা সরেছেন একদা মমতা ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল নেতা। সেইসঙ্গে দলের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ইদানিং তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতেই তাঁকে দেখা যায় না। হালের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিও এড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কানন’। বৃহস্পতিবার বেহালা এলাকায় তৃণমূলের এহেন জনসংযোগ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে শোভনের অনুপস্থিতি নজর কেড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন: ‘পার্থবাবু নিষেধ করেছেন’, আজ ইস্তফা দিলেন না বৈশাখী
বৃহ্স্পতিবার বেহালা এলাকায় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। যেখানে ছিলেন তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। ওই কর্মসূচি থেকে টি-শার্ট বিলি করা হয়। এ প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনা আমাদের দায়িত্ব। এখনও পর্যন্ত আমরা দারুণ সাড়া পেয়েছি এই কর্মসূচিতে। এটা সত্য নয় যে শুধুই ক্ষোভ শুনছি। আমরা জনগণের পরামর্শও শুনছি’’। শোভনের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে অবশ্য মন্তব্য এড়িয়েছেন পার্থ।
আরও পড়ুন: বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা
বেহালা পূর্ব বিধানসভা এলাকা থেকেই ২০১১ ও ২০১৬ সালে জিতেছিলেন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। গত বছরে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারিক বিবাদ ও মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। এরপর থেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে কার্যত নিজেকে গুটিয়ে নেন শোভন। কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপরই জল্পনা ছড়ায় তবে কি তিনি তৃণমূল ত্যাগ করছেন? শোভনের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনাও তুঙ্গে বঙ্গ রাজনীতিতে। গত বুধবার বৈশাখীর সঙ্গে এক সাংবাদিক বৈঠকে ‘অন্য পথ বেছে নেওয়ার’ কথা বলেছিলেন একদা মমতা ঘনিষ্ঠ এই নেতা। তবে বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কখনই সেভাবে মুখ খোলেননি শোভন। গত ২৩ জুলাই মধ্যরাতে শোভনের ফ্ল্যাটে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি যে তৃণমূলে ফিরবেন না, সেদিনের বৈঠকে পার্থকে শোভন জানিয়ে দেন বলে জোর চর্চা বঙ্গ রাজনীতিতে। এই প্রেক্ষিতে দলের কর্মসূচিতে শোভনের গরহাজিরা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
Read the full story in English