পার্থ চট্টোপাধ্যায় জিন্দাবাদ স্লোগানেই যেন আটকে গেল বেহালার তৃণমূলের মিছিল। 'হোক প্রতিবাদ' কী বদলে গেল 'উন্নয়নের পক্ষে এগারো বছর'-এর ধন্য়বাদ জ্ঞাপণ মিছিলে? এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হলেও শুক্রবার বেহালার মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা কেউ এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারও ঝাড়গ্রামে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। কিন্তু এদিনের মিছিলে মায় সেই স্লোগানও শোনা গেল না।
শুক্রবার রাজ্যে পরিবর্তনের সরকারের ১১তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তৃণমূলের একমাত্র মিছিল হল বেহালায়। স্থানীয় কাউন্সিলরদের উদ্যোগে অজন্তা থেকে বেহালা চৌরাস্তা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় মিছিলে ভিড় ছিল ভালই। তবে মিছিল শুরুর পর ফেস্টুন এসে পৌঁছায়। মিছিলজুড়েই ছিল একটু অগোছাল অবস্থা। গতকাল প্রচার হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে 'হোক প্রতিবাদ' মিছিল হবে বেহালার অজন্তা থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত। আজ আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফেস বুকে 'হোক প্রতিবাদ' পোস্ট সরিয়ে ফেলার আবেদন জানানো হয়। ওই পোস্টেই বলা হয় মা-মাটি-মানুষের সরকারের উন্নয়নের ১১বছরের সমর্থনে মিছিল করতে। অন্য কোনও বিষয় যেন না আসে। যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে উন্নয়নের মিছিল হলেও নজরকাড়া পোস্টার তেমন ছিল না।
এদিন মিছিলে হাজির ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলররা। পার্থ সরকার, কাকলি বাগ, রাজীব দাস, ছন্দা সরকার, মালবিকা বৈদ্য, ১৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান অঞ্জন দাসরা মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মিছিলে বেহালা পশ্চিমের উন্নয়নের কান্ডারী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জিন্দাবাদ স্লোগান উঠলেও সিবিআই বা কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়েও কিছু শোনা যায়নি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে চক্রান্ত করে বন্ধ করা যায়নি যাবে না, কুৎসা করে তৃণমূলের আন্দোলন বন্ধ করা যায়নি যাবে না, স্লোগান ছিল। সিপিএম, বিজেপির বিরুদ্ধেও জোরালো স্লোগান ছিল। তবে কয়েকটি বাসে ছোট কাগজে 'পার্থ দা এগিয়ে চলুন, বেহালার মানুষ আপনার পাশে আছে' লেখা ছিল।
এর আগে সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টেরেট-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সির কার্যকলাপ নিয়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিক আন্দোলন সংগঠিত করেছে ঘাসফুল শিবির। এবার এখনও পথে নামেনি দল। বৃহস্পতিবার রাতে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেহালায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। এদিকে এসএসসি নিয়ে সিবিআইয়ের তদন্ত রোজকার আদালতের তত্বাবধানে হচ্ছে। শুক্রবার মন্ত্রী কন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এমনকী তদন্ত চলাকালীন মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছে হাইকোর্ট।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এর আগে সিবিআই বা ইডি চিটফান্ড নিয়ে তদন্ত করলেও রোজ এমন কোনও নির্দেশ দিতে দেখা যায়নি আদালতকে। এসএসসির ক্ষেত্রে হাইকোর্ট প্রতিদিনই কোনও না কেন নির্দেশ দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে দলের স্ট্যান্ড পয়েন্ট কী হবে তা নিয়েই দ্বিধায় নেতৃত্ব। পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে পরিবেশ তৈরি করার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। মহাসচিবের নির্বাচনকেন্দ্রে মিছিল হলেও বেহালা পশ্চিমের উন্নয়নের কান্ডারী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জিন্দাবাদ ছাড়া তেমন প্রতিবাদের ভাষা শোনা গেল না।
আরও পড়ুন- বাড়ি ফিরেই চেনা মেজাজে কেষ্ট, ভাসলেন সংবর্ধনায়, বললেন- ‘আমি আছি -মরি নাই।’