রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্র। তদন্ত কমিশনের মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে।। না হলেই একতরফা কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রর এই পদক্ষেপকে 'নক্কারজনক' বলে এবার তোপ দাগলো তৃণমূল। বাংলায় হার মেনে নিতে পারছে না বিজেপি। তাই রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করা হচ্ছে। আর নিশানা করা হচ্ছে প্রাক্তন আইএসকে, এমনটাই দাবি রাজ্যের শাসক শিবিরের।
আলাপনকে দেওয়া কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন বর্ষীয়াণ তৃণমূল নেতা সৌগত রায় এবং রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ করেন, 'আইন অনুসারে রাজ্যের অধীনে কাজ করার সময় কোনও আমলাকে এভাবে ডেকে পাঠানো যায় না। আর তাঁকে কেন্দ্রের ডেপুটেশনে যেতে হলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হয়।' এপরপরই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণের কথা বলেল বর্ষীয়ান সাংসদ। তাঁর কথায়, 'সৎ আমলাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই রাজ্য সরকারকে বিরক্ত করার জন্যই কেন্দ্র সবটা করছে।'
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh: ‘বঙ্গভঙ্গ’র অস্বস্তি ধামাচাপা দিতে ‘বঞ্চনা’ই হাতিয়ার দিলীপের
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র কেন শোকজ করতে পারে না, তার আইনি ব্যাখ্যাও দেন আরেক তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। যুক্তরাষ্ট্রীয় নিয়ম তুলে ধরে তাঁর যুক্তি, কোনও আইএস অফিসার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন কিনা তা নির্ধারণ করে রাজ্য সরকার। তেমনই কেন্দ্রে তরফে এই বিষয়ে কোনও আইএসকে বেছে নেওয়া হলেও রাজ্যের অনুমতির প্রযোজন রয়েছে। এক্ষেত্রে তা হয়নি। ফলে আপালপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শাস্তি দেওয়ার কোনও কারই নেই।
রাজ্যের অনুরোধে বাংলার মুখ্যসচিব আইপিএস আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিল কেন্দ্র। তার মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ইয়াস বৈঠকে হাজির না থাকায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কেন্দ্র। মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে বদলি না করার জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তা নাকচ করে দেওয়া হয়। শুরু হয় কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন। কর্মজীবনের শেষ দিন আলাপনবাবুকে দিল্লিতে কর্মিবর্গ মন্ত্রকে হাজিরার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই অবসরগ্রহণ করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও শোকজ করা হয় তাঁকে। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্র। তাই মমত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টাকে কড়া চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রক। সেখানে উল্লেখ, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তাঁকে অবশ্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। সশরীরে প্রাক্তন মুখ্যসচিব তদন্ত প্রক্রিয়ার সামনে হাজির হবেন কিনা তা জানাতে হবে। না হলে, কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন