Advertisment

দলবদলের খেলায় কি পিছিয়ে পড়ছেন মুকুল রায়?

"দলে যোগদান নিয়ে তাড়াহুড়োর কিছু নেই। বিধানসভা নির্বাচন স্বাভাবিক সময়ে হলে ২০২১-এ ভোট হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে অনেকটা সময় রয়েছে। দলে যোগ দিলে বিজেপির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হবে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mukul roy, মুকুল রায়

মুকুল রায়। এক্সপ্রেস ফাইল ফটো: শশী ঘোষ

যোগদান পর্ব নিয়ে কি বিজেপিতে চাপে রয়েছেন মুকুল রায়? কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে মুকুলের হাত থেকে পদ্ম পতাকা তুলে নিচ্ছেন বাংলার একাধিক নেতা, এমন দৃশ্য এক সময় নিয়মিত হয়ে উঠলেও ইদানীং তা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু দিন আগে দিল্লিতে টলিউডের কয়েকজন শিল্পী মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন বটে কিন্তু তেমন জোরালো রাজনৈতিক জার্সি বদল আর হচ্ছে কই? সেদিনের পর থেকে তেমন কোনও যোগদান অনুষ্ঠানে দেখাও মিলছে না মুকুল রায়ের। যেসব যোগদান হচ্ছে তা কেবল দিলীপ ঘোষ বা অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতেই হচ্ছে। তাহলে কি যোগদান নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বাধা পাচ্ছেন মুকুল রায়? নাকি বিজেপি-তে গুরুত্ব কমে গিয়েছে তাঁর? এমন প্রশ্নই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।

Advertisment

লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই নিয়ে দলের ভিতর ও বাইরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। এরপর হালিশহর, কাঁচরাপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলররা মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিলেও কয়েকদিনের মধ্যেই 'ঘরে ফিরে' গিয়েছেন এবং পুরসভাগুলির দখলও ফের নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসই। জানা যাচ্ছে, এই ঘটনার পরই দিলীপ শিবির দাবি করে, যোগদান নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা বা রাজ্য সংগঠনের সঙ্গে কথা বলতে হবে। রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে দিল্লিতে গিয়ে যোগদান করানো যাবে না। রাজ্য বিজেপি সভাপতির এই মতে সিলমোহর দেয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। এরপরই মুকুলের হাত ধরে যোগদান এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন- ডাহা ফেল মমতা-পিকে, মুকুলের হাতে ‘সমীক্ষার ফল’

যোগদানের বিষয়ে কী বলছেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়? তৃণমূলের একদা 'প্রধান সেনাপতি' ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "দলে যোগদান নিয়ে তাড়াহুড়োর কিছু নেই। বিধানসভা নির্বাচন স্বাভাবিক সময়ে হলে ২০২১-এ ভোট হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে অনেকটা সময় রয়েছে। দলে যোগ দিলে বিজেপির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হবে।" তাছাড়া দলে যোগদান নিয়ে কোনও ক্ষোভবিক্ষোভ নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ১০৭ জন বিধায়ক যোগাযোগ করেছেন, তাঁদের কী খবর? মুকুলবাবু বলেন, "নানাভাবে ১০৭ জন বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সেই তালিকা তুলে দিয়েছি। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই নেবে। তাই আগ বাড়িয়ে কিছু বলছি না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চিন্তাভাবনা করে জানাবে। যারা যোগ দেবেন, তাঁদের দাবি মেটারও ব্যাপার রয়েছে।" উল্লেখ্য, অতীতে মুকুলকে এমন তালিকা দিয়ে, অনুমতি নিয়ে যোগদান করাতে দেখা যায়নি। এবার তাঁর এমন আগাম তালিকা দেওয়া থেকেই 'চাপ' স্পষ্ট বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন- ‘সরকারি কাজে নাক গলাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর’, অভিযোগ বিজেপির

রাজনৈতির কারবারিদের মতে, যেসব বিধানসভা এলাকায় লোকসভার নিরিখে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে, সেই সব বিধায়কদের একটা অংশ তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তাঁরা চাইছেন, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম টিকিটটি নিশ্চিত করতে। কিন্তু, রাজ্য বিজেপির একাংশের মতে, যেখানে তৃণমূলের সহযোগিতা ছাড়া জয় পেয়েছে বিজেপি, সেখানে ওই বিধায়কদের দলে নেওয়ার কোনও মানেই হয় না।

অন্যদিকে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, উত্তরবঙ্গ সহ বেশ কিছু লোকসভা আসনে তৃণমূলের একাংশের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া না করলে এমন ভাল ফল করতে পারত না পদ্মশিবির। নীতিগত সংঘাতের জন্য় এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনও অবস্থান স্পষ্ট করতে পারছে না বলে খবর। এই কারণেই 'দল বদলের কারিগর' মুকুল বিজেপিতে যোগ দেওয়ানো নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন।

bjp mukul roy
Advertisment