বাংলায় বিজেপিকে রুখতে এই প্রথম একজোট হতে চলেছে তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বাম-কংগ্রেসের সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাবকে মান্যতা দিতে পারে সরকার, বিধানসভাসূত্রে এমনটাই ইঙ্গিত। সোমবার বিধানসভায় তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষা ও পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাতেই এই ইঙ্গিত মিলেছে বলে খবর। সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে এদিন বিজেপিকে নাম না করে আক্রমণের সুরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, "ধর্মের ভিত্তিতে যে রাজনীতি করা হচ্ছে বাংলায়, তা বন্ধ হোক। ধর্মের ভিত্তিতে বাংলা ভাগ করা যাবে না"। মান্নানের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানান বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। এ বিষয়ে একই সুরে কথা বলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।
ঠিক কী বলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?
তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের মতাদর্শ আলাদা হতে পারে, কিন্তু বাংলাকে ধর্মীয়ভাবে ভাগ করার চেষ্টা যারা করবে, তারা বিচ্ছিন্ন হবে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড-উত্তরপ্রদেশ নয় , যারা পশ্চিমবঙ্গকে ধর্মের নামে বিভাজিত করার চেষ্টা করছে তাঁরা সফল হবে না"। বিধানসভা শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, "এই নিয়ে (সর্বদলীয় বৈঠক) ইতিমধ্যেই প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে, অধ্যক্ষ ঠিক করবেন কবে আলোচনা হবে"।
আরও পড়ুন- বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার একসঙ্গে চলার আহ্বানে কী বলছে সিপিএম-কংগ্রেস?
অন্যদিকে, সর্বদলীয় বৈঠক প্রসঙ্গে কংগ্রেসের বর্ষীয়াণ নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে ক'টা আসন পেয়ে এরা বাংলার সংস্কৃতি শেষ করতে চাইছে। এ বিষয়ে আমরা যারা বিরোধী এবং বাংলার শাসক, সবাই একমত। বাংলায় এটা চলতে পারে না"। আব্দুল মান্নান এর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে এই প্রসঙ্গে সমর্থন করেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীও। এমনকী, মালদায় বৈষ্ণবনগরে গণপিটুনিতে খুন নিয়েও বিধানসভায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক মুস্তাক আলম। তিনি বলেন, "এই খুন আরএসএস এর লোকেরা করেছে, অভিযুক্তকে ফাঁসি দেওয়া হোক"। এদিন এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন- মমতা সরকারকে কড়া নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে বিজেপিকে রুখতে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাম-কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর সেই প্রস্তাব তৎক্ষণাৎ নাকচ করে দিয়েছিলেন মান্নান-সুজনরা। এই প্রেক্ষাপটে বাম-কংগ্রেসের সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাবের প্রতি তৃণমূল সরকারের সমর্থনের ইঙ্গিত রাজনৈতিকভাবে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।