জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের পর এবার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তকমা পেতে মরিয়া হয়ে উঠল 'গোর্খাল্যান্ড'পন্থীরা। এমনিতেই দীর্ঘকাল ধরে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে উত্তাল হয়েছে পাহাড়। এমতাবস্থায় মোদী সরকারের ৩৭০ ধারা রদ এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বীকৃতি সেই আগুনেই ঘৃতাহুতি দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তকমা দেওয়ার কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পোস্টার পড়ল দার্জিলিংয়ে। এরকমই একটি পোস্টারে লেখা রয়েছে "লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি এবং তাঁর মিত্রপক্ষ দার্জিলিংয়ে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান দেওয়ার যে আশ্বাস দিয়েছিলেন তা আসলে ঠিক কী এবার সে কথা জানানোর সময় এসেছে। যদি লাদাখের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে উন্নীত করা যায় তাহলে দার্জিলিংকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন করা হবে না?"
আরও পড়ুন- অবলুপ্ত ৩৭০, জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে কী বলেছিলেন শেষ যুবরাজ?
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলন করা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, "গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব চাইছে ভারতীয় সংবিধানের ৩ নং অনুচ্ছেদ জারি করে করে দার্জিলিংয়ে কেন্দ্রীয় শাসন কায়েম করুক।" বিমল গুরুং বলেন, "উত্তরবঙ্গে ক্রমশ অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বাড়ছে, যা সুরক্ষার ক্ষেত্রে একেবারেই নিরাপদ নয়। কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তকমা দিয়ে সেখানকার সুরক্ষা ব্যবস্থার দেখভাল করতে বদ্ধপরিকর। একইভাবে দার্জিলিংয়েও কেন্দ্রীয় বিধি আরোপ করে সুরক্ষা ব্যবস্থাকে নিশ্ছিদ্র করতে হবে"।
আরও পড়ুন- অসমের পর ওড়িশা? কেন্দ্রপাড়া উপকূলে এনআরসির প্রস্তাব
অন্যদিকে, বিমল গুরুংয়ের একদা সতীর্থ তথা অধুনা বিরোধী বিনয় তামাংও দার্জিলিংকে পৃথক রাজ্যের তকমার দাবি করে থাকেন। তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত তামাং জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে বলেন, "দার্জিলিংকে একটি পৃথক রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি দীর্ঘকাল ধরে রয়েছে। কেন্দ্রের উচিত এই দাবি মঞ্জুর করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দেওয়া।" বিমল তামাং আরও বলেন, "লাদাখের মতো দার্জিলিংয়েও আধা স্বায়ত্তশাসন ছিল"। জানা যাচ্ছে, বিনয় তামাং এবং তাঁর দল ১৫ অগাস্টের পরই আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে ফের আন্দোলনের পথে নামবেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সালের শেষের দিকে সুভাষ ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ-এর নেতৃত্বে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে চরম আন্দোলন শুরু হয় পাহাড়ে। এরপর ২০১৭ সালে ফের একই ইস্যুতে আন্দোলনে নামে বিমল গুরুং-এর নেতৃত্বাধীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সেই আন্দোলন এমনই হিংসাত্মক চেহারা নেয় যে ১১ জন প্রাণ হারান, পাহাড় অবরুদ্ধ হয়ে থাকে ১০৪ দিন। জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনাক্রম কি পাহাড়ে আবার উত্তেজনা ডেকে আনবে, অনিশ্চয়তায় সাধারণ মানুষ।
Read the full story in English