Advertisment

আধিকারিককে মেরে শ্রীঘরে, তবু বিজেপির 'বাঘের বাচ্চা' আকাশ বিজয়বর্গীয়

পুরসভার বক্তব্য, ৫২ এবং ৫৩ নম্বর বাড়ি বিপজ্জনক ঘোষণা করার পরেও ভাঙতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। বাকিরা বাড়ি ছেড়ে দিলেও ৫ টি পরিবার কিছুতেই উঠতে রাজি হয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় পুত্রের ইন্দোরের এক পুর আধিকারিককে ব্যাট দিয়ে বেদম প্রহারের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল দিন দুয়েক আগেই। ঘটনার জেরে গ্রেফতারও হন ইন্দোরের বিধায়ক আকাশ বিজয়বর্গীয়। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন আকাশ। কিন্তু হলে কী হবে? মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতৃত্বের কাছে আকাশ কিন্তু 'বাঘের বাচ্চা'। কৈলাস পুত্রকে বাহবা দিয়ে ইন্দোরের রাস্তায় রাস্তায় ছেয়ে গিয়েছে বিজেপির পোস্টার।

Advertisment

জানা যাচ্ছে, ইন্দোরেরএকটি  বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে বুধবার আকাশের বিধানসভা এলাকাতেই অভিযান চালায় স্থানীয় পুরসভা। আসন্ন বর্ষার কথা মাথায় রেখেই এলাকার এক জরাজীর্ণ বাড়ি ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু এই বিপজ্জনক বেয়াইনি নির্মাণ ‘রক্ষা করতে’ এগিয়ে আসেন বিজেপি বিধায়ক আকাশ বিজয়বর্গীয়। কার্জত একা ‘ব্যাট করে’ প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে দেন কৈলাস-পুত্র।

গণইস্তফার হিড়িক, নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বে নেতৃত্ব সংকটে কংগ্রেস

ভিডিওতে আকাশ হুমকির সুরে বলছেন, ১০ মিনিটের মধ্যে এলাকা না ছাড়লে ফল ভালো হবে না। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল,  এই প্রশ্ন নিয়ে আকাশ বা  কৈলাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেই তাঁদের মতামত জানা যায়নি। এক  জনপ্রতিনিধির এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার ছবি দেখে একইসঙ্গে আতঙ্কিত ও হতভম্ব গোটা দেশ।

publive-image আকাশের সমর্থনে বিজেপি নেতৃত্ব

ইন্দোরে আকাশের বাবা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র প্রভাব প্রতিপত্তি যথেষ্ট। তিনি এমন এক বিধায়ক, যিনি কোনও নির্বাচন হারেননি। মেয়র থেকে উন্নিত হয়ে রাজনৈতিক কেরিয়ারে অনেকটা ওপরে উঠেছেন তিনি। বর্তমানে  পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। আকাশ কিন্তু সে তুলনায় নতুন, প্রথমবার বিধায়ক হয়েছেন। দলে 'ভদ্র', 'নম্র' হিসেবেই পরিচিত। লড়াকু মনোভাব একটু কম বলেই মনে করত দলের নেতৃত্ব। এই ঘটনায় মনোভাব পাল্টেছে অনেক। প্রাক্তন বিধায়ক জিতু জিরাটি বললেন, "শৈশব থেকে আকশকে চিনি। শিক্ষিত, নম্র স্বভাবের, সংস্কার জানত। সেরকম একজন এরকম আচরণ করল কেন? আকশ গরিবদের জন্য কাজ করত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আমার মনে হয় দরকার হলে এরকম করতেই হবে"।

ইন্দোরের বিজেপি মহল রীতিমতো বাহবা দিচ্ছে আকাশকে। ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমকেও আকাশ বলেন, "প্রথমে আবেদন, তারপর নিবেদন, শেষে আক্রমণ"।

‘সংখ্যালঘু তোষণ’ নিয়ে দিলীপের তোপের জবাব দিলেন মমতা

আকাশের এ হেন আচরণ নিয়ে ইন্দোরের মানুষ দ্বিধাবিভক্ত। অনেকেই বলছেন এমন করে ঠিক করেননি আকাশ। কিন্তু গাজি অঞ্চলে বিপজ্জনক বাড়ির কাছে গেলেই শোনা যাচ্ছে অন্য সুর। কৈলাসপুত্রকে সমর্থন করছেন স্থানীয় মানুষ। ইন্দোর পুরসভার বক্তব্য, ৫২ এবং ৫৩ নম্বর বাড়ি বিপজ্জনক ঘোষণা করার পরেও ভাঙতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। বাকিরা বাড়ি ছেড়ে দিলেও ৫ টি পরিবার কিছুতেই উঠতে রাজি হয়নি। উপরন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রদেশ পুরসভার বিরুদ্ধে হেনস্থা এবং অপব্যবহারের অভিযোগ আনেন।

বাড়ির এক বাসিন্দা স্বপ্না শ্রীভান জানিয়েছেন বিগত ৮০ বছর ধরে তাঁর পরিবার সেখানে রয়েছেন। বললেন, "সকাল সাড়ে নটায় পুরসভার সদস্যরা বাড়ি খালি করতে এসেছিলেন। আমরা জানাই বাড়িতে সদ্য একটা মৃত্যু ঘটেছে। এখন অশৌচ চলছে। ওনারা আমাদের কথা না শুনেই খুব খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করেন। একজন মহিলা আধিকারিকও ছিলেন না সেখানে। আমাদেরকে রীতিমতো ধাক্কা দেওয়া হয়। আমরা কোথায় যেতাম? তখন আকাশ এসে ওনাদের থামতে বলেন, তাতেও কাজ না হলে আকাশ রেগে গিয়ে ওই কাণ্ড ঘটান। সব বিধায়কেরই আকাশের মতো হওয়া উচিত। ওনাকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া দরকার"।

পদ আঁকড়ে থাকতে চাইছেন নেতারা, ক্ষোভ রাহুলের

স্বপ্না আরও জানান বিপজ্জনক বাড়িতে বসাবসা করা পরিবারগুলি ঘটনার মাত্র দু'দিন আগে পুরসভার কাছ থেকে নোটিস পেয়েছিল। সেখানে উল্লেখ করা ছিল বাড়ির কাঠামো মজবুত রয়েছে। কংগ্রেসের চাপেই পুরসভা রাতারাতি বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়েছেন স্বপ্না।

তবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস খবর নিয়ে দেখেছে ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল ওই বাড়ির বাসিন্দাদের নোটিস পাঠানো হয়েছিল। নোটিসে ওই দুটি বাড়িকে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল। সঙ্গে এও উল্লেখ করা হয়েছিল বাড়ি থেকে উঠে না গেলে পরিবারের কারোর জীবন অথবা সম্পত্তি বিপন্ন হলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার পরিবারেরই।

Read the full story in English 

bjp
Advertisment