বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে কলকাতায় ফেরছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মাঝপথে হঠাৎই সিঙ্গুরের বিডিও অফিসে পৌঁছে যান রাজ্যপাল। তাঁকে সেখানে দেখে হতবাক বিডিও অফিসের কর্মীরা। গাড়ি থেকে নেমে সরাসরি বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেম্বারের বসে পড়েন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তবে, ছুটিতে থাকায় বিডিও বা দুই জয়েন্ট বিডিও-র দেখা পাননি ধনকড়।
কোথায় বিডিও? ছুটিতে থাকলে কার হাতে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে গিয়েছেন? অফিসে উপস্থিত কর্মীদের প্রশ্ন করেন রাজ্যপাল। উত্তরের জন্য বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করতে দেখা যায় তাঁকে। বিডিও ছুটিতে আছেন ও জয়েন্ট বিডিও মিটিংয়ে গিয়েছেন বলে জানান কর্মীরা। কিন্তু, উপযুক্ত উত্তর না মেলায় হতাশা ব্যাক্ত করেন তিনি। বলেন, 'আমি হয়তো সিঙ্গুর সম্পর্কে আরও কিছুটা জানতে পারতাম। পরে আবার পরিকল্পনা করে এখানে আসবো আমি। তখন, সিঙ্গুর সম্পর্কে বেশি করে জানার আগ্রহ রয়েছে আমার।'
আরও পড়ুন: বুলবুল মোকাবিলায় ‘তৎপর’ মমতার প্রশংসায় রাজ্যপাল
রাজ্যপাল সিঙ্গুরে আসার খবর ছড়াতেই বিডিও অফিসে পৌঁছে যান কয়েকজন কৃষক। রাজ্যপালের কাছে তাঁরা সিঙ্গুরে কৃষির পাশাপাশি শিল্পের দাবি জানান। সিঙ্গুরের কৃষকদের বক্তব্য শুনলেও সিঙ্গুর প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
এর আগে রাজ্যপালের শিলিগুড়ি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এহেন বৈঠক রীতি বিরুদ্ধ বলে দাবি করে শাসক দল তৃণমূল। পদের গড়িমা ভুলে ধনকড় বিজেপির প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করে রাজ্যের শাসক দলের। সোমবার তাঁর সিঙ্গুরের বিডিও অফিসে যাওয়াও বিতর্ক এড়াতে পারেনি। সরব হয়েছে জোড়াফুল শিবির।
আরও পড়ুন: “কার কব্জিতে কত জোর বুঝিয়ে দেব”, চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'একজন রাজ্যপালের বিডিও অফিসে যাওয়া মানায় না। এটা রীতির পরিপন্থী। মনে হচ্ছে, উনি (জগদীপ ধনকড়) পদের দায়িত্ব ও কর্তৃব্য ঠিক বুঝতে পারছেন না।'
২০০৬ সালে টাটাদের ছোট গাড়ি কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে সিঙ্গুর। অঞ্চলের অধিকাংশ জমিরর মালিক, কৃষক, ভাগচাষী বাম সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩৪ বছরের বাম সরকারের পতনের বীজ সিঙ্গুর থেকেই রোপণ হয়েছিল বলে মনে করা হয়। ২০১১ নির্বাচনে রাজ্যপাটে পালা বদল ঘটে। ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। জমি ফেরৎ দেওয়া হয় অনিচ্ছুক জমিদাতাদের। ২০১৯-এ লোকসভায় অবশ্য হুগলি আসনটি জিতে নেয় বিজেপি। সিঙ্গুরে ওই লোকসভারই অংশ।
Read the full story in English