মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একে, তিনি ছিলেন তৃণমূলের দ্বিতীয় স্থানে। তৃণমূলের 'গোড়ার কথা' থেকেই মমতার ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনিই। তবে এবার গল্পে টুইস্ট! বাংলায় ভারতীয় জনতা পার্টির 'মূল' ঠিক করার দায়িত্ব যেন দেওয়া হল তৃণমূল প্রাক্তনী মুকুল রায়কে। আর সে কাজে তিনি যে বেশ সফলও হচ্ছেন তা অবশ্য দলবদলের হিড়িকে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
৬৬ বছরের এই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মমতা শিবির ও ছায়া ছেড়েছিলেন ব্যক্তিগত অসন্তোষ দেখিয়ে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছিলেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভ্যুত্থানের জন্য দলের দ্বিতীয় স্থান হারাতে চলেছিলেন কাঁচরাপাড়ার ভূমিপুত্র। সেই সময়ই তৃণ-সম্পর্ক ছিন্ন করে পদ্মে যোগ দেন মুকুল। এরপর বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হতে সময় বেশি লাগেনি। বিধানসভা নির্বাচন জয়ে তাই মুকুলেই আস্থা রেখেছে বিজেপির হাইকমান্ড।
আরও পড়ুন, ‘ভুল করছেন আপনি’, মমতাকে একথা বলতে পারেন এই একনিষ্ঠ অনুগতই
বঙ্গ বিজেপির মূল শক্ত করতে তৃণমূলদের হেভিওয়েটদের গেরুয়া শিবিরে এনেছেন মুকুলই। শোভন চট্টোপাধ্যায় থেকে শুভেন্দু, তৃণমূলে ফাটল ধরিয়েছেন বর্ষিয়াণ রাজনীতিকই। ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে যখন অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস স্থাপন হয় সেই সময় প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন মুকুল রায়। এরপর মমতার দলের হয়ে দিল্লিতেও একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। কিন্তু ২০১৫ সালে সারদা এবং নারদা কেলেঙ্কারির পর থেকেই মুকুলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে তৃণমূলের। ২০১৭ সালে তৃণমূল সরকারিভাবে ছ'বছরের জন্য সাসপেন্ড করে নেতাকে।
বিজেপির 'চাণক্য' যদি অমিত শাহ হন, তাহলে বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য অবশ্যই মুকুল রায়। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ১৮ আসনে জয়লাভের নেপথ্যে মুকুল রায়কেই ক্রেডিট দিয়েছেন ওয়াকিবহাল মহল। মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু, সব্যসাচী দত্ত, সুনীল সিং, মিহির গোস্বামী মুকুলের হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর শুভেন্দু-রাজীবও। আর সোমবার মমতা ঘনিষ্ট সোনালী গুহও তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে যোগ দেন পদ্মে। সকল নেতা-নেত্রী বক্তৃতায় জানিয়েছেন যে, "মুকুলদার অনুরোধেই…" তবে কি মমতার 'গদ্দার'ই এবার পদ্মের মুকুল হয়ে ফের পরিবর্তন আনবেন?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন