‘দুঃখ হয়...একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করে না’-কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধনে আমন্ত্রণ না জানানোয় শেষমেশ ‘ক্ষোভ’ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিধানসভায় এ প্রসঙ্গে আক্ষেপের সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার ছবির দরকার ছিল না। জানাতে পারত। আমার চোখের জল পর্যন্ত ফেলতে হয়েছে। মেট্রো প্রকল্পের জন্য লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বাংলায় এনেছিলাম। আজ দুঃখ হয় যখন সব কিছু করে দেওয়ার পরে ছোট্ট একটা রুট চালু করে একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করে না। একটা তথ্যও দেয় না’’। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
Advertisment
অন্যদিকে, বঙ্গ বিধানসভায় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েন বিজেপি, কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভার অধিবেশন। সারদা চিটফান্ড থেকে রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্প, হাজরার মার খাওয়া থেকে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম সব কথাই উঠে আসে মমতার জবাবী বক্তৃতায়। ‘‘ভবানীপুরের ভোট নিয়ে ভাবতে হবে না, যাদবপুর নিয়ে ভাবুন। নিজের চরকায় তেল দিন’’, এ ভাষাতেই সুজনকে আক্রমণ করেন মমতা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এদিন বিধানসভায় এই প্রসঙ্গ তোলে সিপিএম। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাজরায় আমাকে মেরেছিলেন। ভুলে গিয়েছেন? জেএনইউর ঘটনায় আমরা সহানুভূতি জানিয়েছিলাম। দীনেশ ত্রিবেদীকে আমরা পাঠিয়েছিলাম’’। এদিন তাঁর গলায় উঠে আসে সিঙ্গুরের কথাও। তিনি বলেন, ‘‘সিঙ্গুরে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমাকে মারা হয়েছিল। জুতো কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমি কিছু করিনি। কিছু ভাঙিনি। পারলে ভিডিও দেখে নিন। রোজ মিছিল করছে। পুলিশের চুলের মুঠি ধরে মারছে। এদের কেন গ্রেফতার করছে না জানি না’’।
Advertisment
বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘আর একটা নতুন কায়দা বেরিয়েছে। হঠাৎ করে বেরিয়ে দিল্লির রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। এটা কী হচ্ছে? নিজেরা বলে কর্মীদের সামলাতে পারছেন না। ইতিহাস কিন্তু ক্ষমা করবে না’’।
এদিন বিধানসভায় ফের উঠে আসে চিটফান্ড প্রসঙ্গ। মোদী-দিদি আঁতাঁত নিয়ে বরাবরই সরব হয়েছে এ রাজ্যের বাম-কংগ্রেস। এদিন চিটফান্ড প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘সারদাকে কে নিয়ে এসেছিল। কে সেই ব্যক্তি? সারদা গার্ডেন, বিষ্ণুপুরে কার নামে জমি কেনা আছে? সবাই সাধু! ১৯৮০ সাল থেকে চিটফান্ড চলছে’’।
ফের সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে সোচ্চার হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলায় এনআরসি, এনপিআর করতে দেব না। অনেক রাজ্য এনপিআর শুরু করেছে। আমি সবাইকে চিঠি লিখে অনুরোধ করবো দয়া করে এটা করবেন না। মানুষকে ভালোবেসে করতে হয়। গায়ের জোরে এই সব কিছু করা যায় না’’।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন