পুলিশমন্ত্রী হয়ে পুলিশের উপরই ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধেই কেন শুধু পদক্ষেপ’? বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় প্রশাসনিক সভায় পুলিশের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, কেন শুধু তৃণমূলের কর্মীদেরই গ্রেফতার করা হয়? বিরোধীদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না! তৃণমূল কি এখন অনেক সহজ-সুলভ? এ কথার পরই মমতার মন্তব্য, ‘‘পুলিশের কাজ কিন্তু এটা নয়’’।
আরও পড়ুন: রাজীব কুমারকে খুন করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: অর্জুন সিং
ঠিক কী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘একটা জিনিস লক্ষ্য করছি, আমাদের ছেলেদের বিরুদ্ধে কেউ এফআইআর করলে, তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করতে চলে যায়, ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অথচ, অন্য দলের ছেলেরা যখন জোরজুলুম করছে, বদমাইশি করছে, যা নয় তাই করছে, তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, বলে ব্যালান্স করছি। এটা কিন্তু পুলিশের কাজ নয়। এখন মনে হচ্ছে, তৃণমূল অনেক সহজ সুলভ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলকে ধরতে পারেন, ছুঁতে পারেন, গালিগালাজ করতে পারেন। ভাবেন, প্রশাসনকে বিরক্ত করবে না, কারণ প্রশাসন তাঁদের কাছে। তাই বলে ঘরের ছেলেকেও মাথায় রাখতে হয়, মনে রাখতে হয়’’।
EXCLUSIVE: ‘মমতার সঙ্গে কেন কথা বলব? বিজেপিতে যোগ দিতে যাইনি’
উল্লেখ্য, এতদিন বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বা অশান্তিতে অভিযুক্ত শাসকদলের কর্মীদর বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে সরব হতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলগুলোকে। এমনকী, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, অর্জুন সিংরা। পুলিশকে মমতা সরকার অপব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। কিন্তু, এদিন মমতার গলায় সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর শুনে হতবাক সংশ্লিষ্ট মহল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, তৃণমূল সরকারের পুলিশ যে আদতে মমতার দলের কর্মীদেরই কড়া নজরদারিতে রাখে এদিন সে বার্তা দিয়ে আসলে 'নিরপেক্ষ প্রশাসনে'র ভাবমূর্তি পরোক্ষে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। সে ক্ষেত্রে পুলিশকে সাবধান করে দেওয়া কেবলই 'লোক দেখানো' বলে মত তাঁদের। এদিকে আবার একাংশের পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতায় আসা কার্যত সুনিশ্চিত মনে করে পুলিশ প্রশাসন এখন 'উল্টো সুরে' গাইছে। সে জন্যই সরাসরি বার্তাটি দিয়ে দিলেন প্রশাসনিক প্রধান তথা তৃণমূল সুপ্রিমো।