৬ মাসেই পাল্টে গেল পাশা। বিজেপি-তৃণমূলের ভোটপ্রাপ্তির শতাংশের হিসাবে বা ভোটের ব্যবধানও আকাশ-পাতাল। সাধারণত উপনির্বাচনে শাসকদল অ্যাভভান্টেজ পায়। এক্ষেত্রে একধাক্কায় সব কিছুই ছাপিয়ে গিয়েছে। বিজেপির ওপর যে ভোটারদের ভরসা কমছে তা দিনহাটা ও শান্তিপুর কেন্দ্রের ভোটের ফল বড় প্রমান বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বাকি দুই কেন্দ্র, গোসাবা ও খড়দহের কথা না আলোচনা করাই গেরুয়া শিবিরের পক্ষে মঙ্গল।
৫৭ ভোটের ব্যবধান উল্টে গেল ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫ ভোটে। বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানিক পেয়েছিলেন ৪৭.৬০ শতাংশ ভোট। তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ পেয়েছিলেন ৪৭.৫৮ শতাংশ ভোট। উপনির্বাচনে লাগাতার প্রচার চালিয়েও আগের ভোটের ধারে-কাছে যেতে পারল না গেরুয়া শিবির। বিজেপির এবারে ভোট শতাংশ ১০.৯৪, তৃণমূলের সেখানে প্রাপ্তি ৮৪.৫৪ শতাংশ ভোট। শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক নয়, একাধিক বিধায়ক এই উপনির্বাচনে বিজেপির হয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন। কিন্তু ভাড়ার শূন্যই!
মাত্র ৬ মাস আগে শান্তিপুর কেন্দ্রে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার ১৫,৮৭৮ ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী অজয় দেকে। সেই কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান প্রায় ৬৩,৮৯২ হাজার। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট। বিজেপি এবার পেয়েছে ২৩.২৪ তৃণমূল ৫৪.৮২, সিপিএম ১৯.৬১। উপনির্বাচন হলেও বিজেপির এই ফল সার্বিক ভাবে আগামী পুর নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল, অন্তত দিনহাটা ও শান্তিপুর কেন্দ্রে লড়াইয়ের জায়গায় থাকবে বিজেপি। গেরুয়া শিবির সর্বশক্তি দিয়ে ঝঁপিয়ে পড়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর একের পর এক বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের দিকে যোগ দিয়েছেন। বিধায়কদের লম্বা তালিকা রয়েছে যাঁরা তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছে, এই দাবি করছে খোদ তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিজ্ঞ মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের ফলের পর বিপদে পড়েও বিজেপি কর্মীরা নেতৃত্বকে কাছে পাননি বলে অভিযোগ। তারওপর ওপরমহলের সঙ্গে শাসকদলের 'সম্পর্ক' নিয়েও সন্দিহান গেরুয়া শিবিরের নীচুতলার কর্মীরা। সেক্ষেত্রে তাঁরাও গেরুয়া শিবিরকে সঙ্গ দেননি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শাসকদলের সঙ্গে থাকাই শ্রেয় বলে মনে করেছে ভোটাররা।
বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব ভোট নিয়ে নানান অভিযোগ করছে। তা সত্বেও পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে আগামিদিনে এরাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন হবে বলেই ধারনা রাজনৈতিক মহলের। বোঝাপড়ার রাজনীতিতে ফের মাটি ফিরে পেতে পারে সিপিএমও। শান্তিপুর ও খড়দহের উপনির্বাচনের ফল সেকথাই জানান দিচ্ছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন