বিজেপি থেকে দলত্যাগীদের তৃণমূল কংগ্রেস নেবে কী না এই ইস্যুতে বাংলার রাজনীতি যখন সরগরম ঠিক তখনই বিজেপি থেকে প্রথম দলবদল করে ঘাসফুলে যোগ দেন সপুত্র মুকুল রায়। বিজেপি থেকে আরও সাংসদ-বিধায়ক লাইন দিয়ে আছেন বলেও তৃণমূল নেতৃত্ব ঘোষণা করে দেয়। তবে তাঁকে কী দায়িত্ব দিতে পারে দল এই নিয়ে চলছে কানাঘুষো। দলীয় সূত্রের খবর, মুকুল রায়কে তাঁর পুরানো পদ ফিরিয়ে দেবে তৃণমূল কংগ্রেস।
দলত্য়াগী তৃণমূল নেতারা যাতে দলে যোগ দিতে না পারেন তার জন্য চেষ্টার কোনও কসুর করছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি প্রার্থী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষালরা তা হারে হারে টের পাচ্ছেন। প্রকাশ্য়ে বিরোধিতা করা শুধু নয়, লাগাতার তাঁদের বিরুদ্ধে পোষ্টার পড়ছে। অবশ্য পোস্টার যন্ত্রনায় ভুগতে হয়নি সপুত্র মুকুল রায়কে। এমনকী তাঁদের বিরোধিতা করে কেউ মুখও খোলার সাহস দেখায়নি।
আরও পড়ুন- Prabir Ghoshal: ‘মধুচক্রের নায়ক-গদ্দার’, কোন্নগরে প্রবীরের নামে পোস্টার তৃণমূলের
তৃণমূল ভবনে মুকুল-যোগের দিন অবশ্য় তাঁর পদ না ঘোষণা করলেও কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সম্ভবত দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি হতে চলেছেন মুকুল রায়। এর আগে সারদা তদন্তের বিতর্কের সময় ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুকুল রায়কে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল দল। সেই পদে বসিয়েছিল সুব্রত বক্সীকে। পরবর্তীতে মনোমালিন্য় মিটিয়ে তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি পদে বসানো হয়েছিল। সংগঠনগতভাবে যে কোনও দক্ষিণপন্থী সংগঠনের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের হাতেই ক্ষমতা থাকে।
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh: পার্থর বাড়িতে শোভন-বৈশাখী, নাম না করে তীব্র আক্রমণ দিলীপের
অভিজ্ঞমহলের মতে, সহসভাপতি করে তাঁকে অন্য রাজ্যে দলের শক্তি বৃদ্ধির কাজে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিধায়ক পদ ছেড়ে রাজ্যসভার সদস্য করা হতে পারে বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। প্রথমত তিনি একসময় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন, তার আগে ছিলেন জাহাজ দফতরের প্রতিমন্ত্রী। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য়ের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাহলে কমপক্ষে 'ডেপুটি চিফমিনিস্টার' করতে হবে মুকুল রায়কে। তৃণমূল নেতৃত্ব সেই পথে হাঁটবে না বলেই ধারনা রাজনৈতিক মহলের।
দীর্ঘ দিন রাজ্য়ে পুরসভাগুলোর নির্বাচন হয়নি। পুরপ্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে অধিকাংশ পুরসভায়। এবার সেই সব পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। একসময় দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন মুকুল রায়। পুরপ্রার্থী ঠিক করার পিছনে তাঁর গুরুদায়িত্ব থাকত। তাঁকে ছাড়াই এবারের বিধানসভা উৎরে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুরনির্বাচন নিয়ে বেশি ভাবছেও না দল। এদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে অর্থাৎ ভিন রাজ্য জয় করা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে কিছুটা 'সফট টার্গেট' হিসাবে বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরাকে বেছে নিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। বহির্বঙ্গে শক্তি বৃদ্ধির দায়িত্ব বর্তাতে পারে মুকুলের ওপর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন