Advertisment

বঙ্গ পদ্মে তুঙ্গে 'বিদ্রোহ', রা নেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের, সমাধান শেষমেশ ভাঙনেই?

অনেকেই আবার সঙ্ঘের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তবে তাঁরাও দলের বর্তমান কার্যকলাপ নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ।

author-image
Joyprakash Das
New Update
will BJP organization in West Bengal break

বাংলার গেরুয়া শিবিরে শুধুই ছন্দ-পতন।

বিধানসভায় প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে শুরু হয়েছিল তারপর থেকে শুধুই ছন্দ-পতন। ২ মে রাজ্যে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই ক্রমশ ছন্নছাড়া বঙ্গ বিজেপি। ঘাসফুল থেকে পদ্মের মধূ লেহনে আসা লোকজন ফিরে গিয়েছে আগের বাসায়। অনেকে আবার এরই মধ্যে তৃণমূলের প্রার্থীও হয়েছে পুরসভা ভোটে। পদ্ম প্রতীকে জয় পাওয়া একাধিক বিধায়ক ভিড়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। এদিকে বঙ্গ বিজেপিতে রীতিমতো প্রকাশ্য বিদ্রোহ জারি। বিদ্রোহের রেশ কতদূর যাবে তা নিয়ে নানা মত তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisment

এর আগে বঙ্গ বিজেপির অনেকেই শাস্তির কোপে পড়েছেন। কিন্তু যেভাবে প্রকাশ্যে প্রেস ক্লাবে একের পর এক বোমা বিষ্ফোরণ ঘটালেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তেওয়ারী তা প্রায় নজিরবিহীন। জয়প্রকাশ কংগ্রেস থেকে এলেও রীতেশ দীর্ঘ বছর ধরে বিজেপিতেই রয়েছেন। এই ভূমিকায় অশনি সংকেত দেখছে গেরুয়া শিবিরের একটা বড় অংশ। সব থেকে বড় কথা কোনও পক্ষই নমনীয় মনোভাব যেমন দেখাচ্ছে না তেমনই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় বিজেপির বিবাদ নিয়ে এখনই কোনও সরসারি পদক্ষেপ করছে না। অন্যদিকে রাজ্য কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া প্রবীণদের অনেকেই সব ঘটনা ঠাহর করে চলেছেন। তাঁরা মুখে কোনও রা কাটছে না। এই সব ঘনঘটার মধ্যে রাজ্য বিজেপির আন্দোলন কর্মসূচি লাটে উঠেছে। দলের ক্ষোভ-বিক্ষোভেই সময় কেটে যাচ্ছে। বর্তমানে আন্দোলকারী বামপন্থী ছাত্র সংগঠনও এখন প্রচারের পাদপ্রদীপে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এই প্রকাশ্য বিবাদের জল বহু দূর গড়াতে পারে। নিতান্তই যে দলে থেকে দর কষাকষি করা বা শীর্ষ নেতৃত্বকে চাপে রাখার জন্য বিক্ষুব্ধরা এমন ভাবে ময়দানে উত্তীর্ণ হয়েছেন তা মনে করার কোনও কারণ দেখছে না অভিজ্ঞ মহল। বরং নানা গুঞ্জন রাজনৈতিক মহলে। বিভাজনের দিকে এগানোর সম্ভাবনা দেখছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই আবার সঙ্ঘের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তবে তাঁরাও দলের বর্তমান কার্যকলাপ নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ। তাঁরা মনে করছেন, বাংলায় আপাতত সর্বভারতীয় দলের আশা-ভরসা খুব একটা নেই। সেই হিসাবে তাঁদের মাথায় নানা অঙ্ক ঘুরছে।

বিজেপিতে থাকা মতুয়া নেতৃত্ব কিন্তু এখনও তাঁদের দাবি থেকে সরে আসেনি। সিএএ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তারওপর রাজ্য কমিটি বা জেলার বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের প্রতিনিধিদের রাখার দাবি আরও জোরালো করেছে বিজেপির বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে নিয়ে। রাজনৈতিক মহলে মতুয়াদের ভিন্ন রাজনৈতিক দলগঠন নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মতুয়ামহাসঙ্ঘের বিজেপি ভাবধারার লোকজন এখনও এমন কিছু ভাবছে না। বরং যতটা চাপ তৈরি করা যায় সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখছে। ওই অংশের মতে, নতুন রাজনৈতিক দল করলে প্রথম পর্যায়ে শাসক-বিরোধী দুই পক্ষের সঙ্গে সংঘাতের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ মতুয়া ভোট ব্য়াংক নিয়ে তখন নতুন সমীকরণ তৈরি হবে। এই মুহূর্তে নাগরিকত্ব ও দলে মর্যাদা আদায় করাই মূল লক্ষ্য তাঁদের। এদিকে দ্বিতীয় পিকনিকের পর ফের ঠাকুরনগরে বৃহস্পতিবার মতুয়ারা তৃতীয় পিকনিকের আয়োজন করতে চলেছে বলে খবর।

দলের বিক্ষুব্ধদের একাংশের সঙ্গে মতুয়া মহাসঙ্ঘের লাগাতার বৈঠক ও শান্তনু ঠাকুরের হুঁশিয়ারি, সেক্ষত্রে বৃহত্তর বিভাজন তৈরি হবে কীনা তা নিয়েও মশগুল রাজনৈতিক মহল। তবে প্রথম পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা পৃথক বিভাজনের পথে যাবে কী যাবে না তা নিয়েই বেশি চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। তবে বাংলার রাজনীতির ইতিহাস বলছে যাঁরা দল ভেঙে বেরিয়ে এসেছে তাঁরাই বেশি শক্তিশালী হয়েছে। রাজ্যশাসন করেছে, এখনও করেছে। জাতীয় রাজনৈতিক দলের সংগঠন বাংলায় মজবুত হওয়ার তেমন কোনও সম্ভাবনা আপাতত নেই।

bjp dilip ghosh Suvendu Adhikari Bengal BJP Sukanta Majumder
Advertisment