নয়া নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নিয়ে ফের বুধবার মুখ খুললেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এবারে তাঁর বক্তব্য, পুলিশের গুলিতে কোনও আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয় নি, হয়েছে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে।
"উপদ্রবি, উপদ্রবি কে গোলি সে মরে হ্যাঁয় ("ঝামেলাবাজরা ঝামেলাবাজদেরই গুলিতে মরেছে," রাজ্য বিধানসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন আদিত্যনাথ। এখন পর্যন্ত এই বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে উত্তরপ্রদেশেই, যেখানে প্রধানত গুলিতে নিহত হয়েছেন মোট ২২ জন।
আদিত্যনাথ আরও বলেন, "পুলিশের প্রশংসা করা উচিত। কেউ যদি মরতেই আসে, তাকে কীভাবে বাঁচানো যায়? কেউ যদি কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে মারতে যায়, এবং পুলিশ তাকে চ্যালেঞ্জ করে, তবে হয় সে মরবে, নাহয় পুলিশ মরবে। কেউ পুলিশের গুলিতে মরে নি। সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের পেছনে বড় চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গিয়েছে।"
উত্তরপ্রদেশের বিরোধীরা প্রত্যেকটি মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন, এবং সমাজবাদী পার্টি দাবি করেছে যে পুলিশ ও বিজেপি সমর্থকদের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে আন্দোলনকারীদের। প্রতিবাদ চলাকালীন পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: সিএএ বিরোধিতায় কড়া পদক্ষেপ, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত যোগীরাজ্যের চিকিৎসক
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে মিলছে না বিজনোরের পুলিশ সুপার সঞ্জীব ত্যাগীর বয়ান। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ত্যাগী জানিয়েছিলেন যে মহম্মদ সুলেমান নামক বিজনোরের বাসিন্দা ২০ বছরের এক যুবককে "আত্মরক্ষার" খাতিরে গুলি করেন কনস্টেবল মোহিত কুমার। এর জেরে ছ'জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়, যাঁদের মধ্যে ছিলেন নাহতৌর থানার তৎকালীন স্টেশন হাউজ অফিসার রাজেশ সিং সোলাঙ্কি।
জানুয়ারি মাসে দাঙ্গা এবং খুনের চেষ্টার দায়ে অভিযুক্ত দুই বিক্ষোভকারীকে জামিন দেওয়ার সময় পুলিশকে তুলোধোনা করে বিজনোরের এক দায়রা আদালত। আদালতের বক্তব্য ছিল, না অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গুলি চালানো অথবা আগুন লাগানোর চেষ্টার প্রমাণ দিয়েছে পুলিশ, না তাঁদের কাছ থেকে কোনোরকম অস্ত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে, না কোনও পুলিশকর্মীর গায়ে গুলি লেগেছে।
সোমবার এলাহাবাদ হাইকোর্টে একটি রিপোর্ট জমা দিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, গত বছরের ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর রাজ্যে সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ চলাকালীন হিংসার বলি হন ২২ জন। পাশাপাশি আহত হন ৮৩ জন সাধারণ মানুষ ও বিক্ষোভকারী, এবং ৪৫৫ জন পুলিশকর্মী। এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, হিংসায় নিহত হয়েছেন ২০ জন।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে পুলিশের বিরুদ্ধে জমা পড়া অভিযোগের মধ্যে থেকে আটটি অভিযোগকে বেছে নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্তে সামিল করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন