রেশন নিয়ে যে তিনি বেজায় ক্ষুব্ধ তা দলীয় বৈঠকে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কালীঘাটে নিজের বাসভবনের অফিস থেকে এই প্রথম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলের জেলা সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করলেন তিনি। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি, রেশন নিয়ে কোনও বেয়াদপি বরদাস্ত করা হবে না। এর পাশাপাশি তিনি বিজেপির অপপ্রচার রুখতেও নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জনসংযোগ বজায় রেখে কাজ করতে বলেছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের।
লকডাউন শুরু হওয়ার পর রেশন নিয়ে নানান অভিযোগ উঠতে থাকে রাজ্যজুড়ে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দফতরের প্রধান সচিবকে। তারপরও রেশন নিয়ে রাজ্যজুড়ে উত্তাপ ক্রমশ বেড়েছে। ডিলারের বাড়ির সামনে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ, ডিলারের বাড়িতে হামলা ঘটেছে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায়। এরই মধ্যে বিজেপি রেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে। সামগ্রিকভাবে রাজ্যের রেশনকাণ্ড নিয়ে যে তিনি অসন্তুষ্ট তা এদিন ভিডিও কনফারেন্সে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মমতা।
আরও পড়ুন- পরিযায়ীদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে বিরোধী নিশানায় মমতা সরকার, ‘তোষণ’ রাজনীতির অভিযোগ
এদিন রেশন প্রসঙ্গে তৃণমূলনেত্রী কড়া পদক্ষেপের বার্তাও দিয়েছেন। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন, "সরকারের পয়সায় মাতব্বরি করা বন্ধ কর। রেশন দিতে হলে নিজেদের পয়সায় দাও। যে দলের হোক না কেন রেশন নিয়ে কেউ বেয়াদপি করলে সরকার তাকে ছাড়বে না।"
রেশন নিয়ে সরকার যে কড়া পদক্ষেপ করেছে সে কথাও মমতা বলেছেন বৈঠকে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিজেপি এসব নিয়ে সমালোচনামূলক প্রচার করে যাচ্ছে। বিজেপির এই প্রচারের বিরুদ্ধে জেলা সভাপতিদের আক্রমনাত্মকভাবে পাল্টা প্রচার করতে হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন- ‘অনাবাসীদের ঘরে ফেরাতে ব্যস্ত মোদীর গ্রামেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য-আশাকর্মীরা’
ওরা রেশন দোকানে জমায়েত কী করে করছে, এদিন এই প্রশ্নই করেন মমতা। এরপরই বলেন, “আপনারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। কেন্দ্রের চালের গুনগত মান আমাদের চালের থেকে খারাপ। কেন্দ্র কিছুই দিচ্ছে না ঠিকমত, সেটা মানুষকে বোঝাতে হবে। তবু টানা রেশন নিয়ে নেগেটিভ প্রচার করছে বিজেপি।" তবে শুধু রেশন নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক দূরত্ব মেনে মানুষের পাশে দাঁড়াতেও নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতিদের।
পরিযায়ী শ্রমিকদের এরাজ্যে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছে বিরোধীরা। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েও বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, পরিযায়ী শ্রমিকদের কীভাবে ১০০ দিনের কাজে লাগানো যায় তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করবে রাজ্য, তবে তাঁরা যেন ঠিকমত কোয়ারেন্টাইনে থাকেন সেটাও দেখা দরকার। এছাড়া হাসপাতাল কেমন কাজ করছে, মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় তাও দেখতে বলেছেন দলনেত্রী। তবে এসব ক্ষেত্রে যে কোনও হস্তক্ষেপ করা যাবে না, এদিনের ভিডিও কনফারেন্সে সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন মমতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন