তিনি বিমান চালাতে পারেন। নয়ডার টেলিভিশন স্টুডিওয় বসে ইংরেজিতে সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন। আবার রাজস্থানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হিন্দিতে টানা বলে যেতে পারেন। রাজস্থানের শেষ নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম, যিনি যেখানেই যান, সেখানেই ভিড় হয়। স্বাভাবিক ভাবেই শচীন পাইলট এবং তাঁর সমর্থকদের প্রত্যাশা, অদূর ভবিষ্যতে অশোক গেহলটের কাছ থেকে পাইলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব বুঝে নেবেন।
কিন্তু, বছর ৪৫-এর পাইলট এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন। আর, এই অপেক্ষা চলছে এক দশক ধরে। এমনকী, শেষ পর্যন্ত পাইলট সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিলেন, অনেক হয়েছে। আর নয়। ২০২০ সালে তিনি বিদ্রোহ করেন। সম্প্রতি, অশোক গেহলটের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। এই অভিযোগ, বসুন্ধরা রাজের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের আমলে দায়ের হয়েছিল। সেই অভিযোগেই সম্প্রতি দিনভর ধরনা দিয়েছিলেন পাইলট। এরপর অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু, সোমবার রাতেই কংগ্রেস হাইকমান্ড পাইলটকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, এই অনশন বেআইনি। এই অনশন কর্মসূচিকে দলবিরোধী বলে ধরে নেওয়া হবে।
তাঁর সমর্থকরা অবশ্য বলছেন, শচীন পাইলট অন্যান্য রাজনৈতিক উত্তরাধিকারীদের মত নন। ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ সদস্যের রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ২১টি আসন। যা ছিল, রাজস্থানের রাজনীতিতে কংগ্রেসের সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। এরপরই পাইলটকে রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করে পাঠিয়েছিল কংগ্রেস হাইকমান্ড। তার ঠিক পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালে নির্বাচনে কংগ্রেস ১৯৫টি আসনের মধ্যে ১০০টি আসনে জয়ী হয়। অর্থাৎ, অর্ধেকেরও বেশি আসনে জেতে।
আরও পড়ুন- লোকসভায় ৩০০-র বেশি আসন নিয়ে ২৪-এ ফিরছেন মোদীই, ডিব্রুগড়ে ভবিষ্যদ্বাণী শাহর
পাইলট সমর্থকদের দাবি, এটা ছিল শচীন পাইলটের পরিশ্রমের ফল। তৎকালীন রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে তিনি টানা পাঁচ বছর ধরে রাজস্থান চষে বেড়িয়েছিলেন। রাজস্থানে দলকে নতুন করে সংগঠিত করেছিলেন। কিন্তু, তারপর দেখা যায় দল গেহলটের দিকে সরে যায়। আর, এনিয়ে পাইলট প্রতিবাদ জানালে, কংগ্রেস হাইকমান্ড উভয়পক্ষকেই সমানভাবে উৎসাহিত করে যাওয়ার নীতি নেয়। যাতে তিক্ততা বেড়েছিল পাইলটের।
তবে, পাইলটের বিরোধিতাকারীদের ধারণা, পাইলট আসলে গেহলটের অভিজ্ঞতার কাছে হেরে গিয়েছিলেন। সদা হাস্যজ্জ্বল, সর্বদা আশ্বস্তকারী এবং সকলকে নিয়ে চলতে চাওয়া গেহলটের তুলনায় পাইলট একজন অস্থির চিত্তের ব্যক্তি। যাঁর সঙ্গে কাজ করা কঠিন বলে দলের অনেক বিধায়কেরই মত।