এটিকে মোহনবাগান: ২ (প্রীতম কোটাল, লিস্টন কোলাসো)
গোকুলাম কেরালা: ৪ (লুকা মাজসেন-২, রিশাদ, জিতিন)
নামেই এএফসি কাপ। মহাদেশীয় কাপের আড়ালে আসল লড়াই ছিল আইলিগ বনাম আইএসএল। এটিকে মোহনবাগান ফেডারেশনের স্বপ্নের আইএসএলের হেভিওয়েট ফ্র্যাঞ্চাইজি। অন্যদিকে, গোকুলাম কেরালা আইলিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুগন্ধ মেখে নেমেছিল বুধবারের যুবভারতীতে। আর সেই হেভিওয়েট দ্বৈরথের কিনা মুখ থুবড়ে পড়ল আইএসএল। আইলিগ চ্যাম্পিয়নরা ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত করল মেরিনার্সদের, তা-ও আবার প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে।
ম্যাচের হাফডজন গোল-ই হল বিরতির পর। আর একের পর এক গোলে পিছিয়ে পড়ে কামব্যাকের স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত মুখ নিচু করেই মাঠ ছাড়তে হল সবুজ মেরুন তারকাদের।
এএফসি কাপের প্রিলিমিনারি পর্বে খেলেননি রয় কৃষ্ণ। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে গোকুলামের বিরুদ্ধে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন সবুজ মেরুন সমর্থকদের নয়নের মনি। অন্যদিকে, গোকুলাম একাদশে এসেছিলেন মহামেডান ম্যাচে না খেলা শরিফ মুকাম্মদ।
আরও পড়ুন: ভরা যুবভারতী সমস্যা হতে পারে বাগানের! AFC যুদ্ধের আগেই হুঁশিয়ারি আলেহান্দ্রোর ‘বাংলাদেশি’ বন্ধুর
প্ৰথমার্ধ পুরোটাই বাগানের। দ্বিতীয়ার্ধে আবার বুলডোজার চালাল গোকুলাম। প্রথমার্ধেই ঠিকঠাক থাকলে অন্তত দু-গোলে এগিয়ে যেতে পারত এটিকে মোহনবাগান। ডেভিড উইলিয়ামস থেকে কাউকো- সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারলেন না।
ফেরান্দোর দল ম্যাচের শুরুটা করেছিল রাজধানী এক্সপ্রেসের গতিতে। একের পর এক আক্রমণে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছিল গোকুলাম রক্ষণ। তখন এটিকে মোহনবাগান কত গোলে জিতবে, তা নিয়েই গ্যালারিতে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
১৮ মিনিটে জনি কাউকোর পাস থেকে কার্যত গোল করে দিয়েছিলেন রয় কৃষ্ণ। মার্কারকে এড়িয়ে সোজা গোলমুখী শট নিয়েছিলেন ফিজিয়ান তারকা। তবে পোস্টে লেগে বল প্রতিহত হয়। ২৯ মিনিটে জনি কাউকো বড়সড় সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। তাঁর দুর্বল শট রক্ষিত ডাগারের সেভ করতে কোনও অসুবিধায় হয়নি। ৩৮ মিনিটে টপ বক্স থেকে ডেভিড উইলিয়ামসের জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। টানা আক্রমণের মুখে পড়ে গোকুলাম কার্যত ডিফেন্স করাতেই মন দিয়েছিল।
বিরতির পরে খেলা ঘুরে যায়। তার আগে প্রথমার্ধে তিরি চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার বড় ধাক্কা খায় সবুজ মেরুন শিবির। লুকা মাজসেনের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে আহত হন স্প্যানিশ তারকা। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। পরিবর্তে নামেন আশুতোষ মেহতা।
বিরতির পর স্বমূর্তি ধরেন মালাবারিয়ান্সরা। ৫০ মিনিটে আসে প্ৰথম গোল এমিল বেনি বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে পাস বাড়ান জামানকে। যিনি হালকা করে বল রাখেন লুকা মাজসেনের কাছে ফিনিশিংয়ের জন্য।
পিছিয়ে পড়ার তিন মিনিটের মধ্যেই এটিকে মোহনবাগান গোলশোধ করে দিয়েছিল প্রীতম কোটালের মাধ্যমে। কোলাসোর ফ্ল্যাগ-কিক থেকে সরাসরি জালে বল জড়িয়ে দেন তারকা সাইড ব্যাক।
তবে সমতা ফিরিয়েও বেশিক্ষণ তা স্থায়ী হয়নি। ৫৭ মিনিটে গোকুলামের হয়ে ২-১ করে দেন রিশাদ। ৬৫ মিনিটে ফ্লেচারের থ্রু বল ধরে মাজসেন নিজের দ্বিতীয় গোল করে যান। আশুতোষ কার্যত মার্কই করতে পারেননি ফ্লেচারকে। ৩-১ হয়ে যাওয়ার পরেই কার্যত ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে যায়। ৮০ মিনিটে লিস্টন কোলাসো ফ্রি-কিক থেকে দুর্ধর্ষ গোলে সবুজ মেরুন শিবিরে আশা জাগালেও ৮৯ মিনিটে পরিবর্ত হিসাবে নামা জিতিন গোল করে বাগানের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন।